লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল রাজনৈতিক দলবদলের। ভোটের ফল দেখে এবং গেরুয়া বাহিনীর হুমকির মুখে বহু নেতা-কর্মীই যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু কিছুদিন গড়াতেই সকলেই নিজেদের ভুল বুঝছেন। তাই ত্যাগ করছেন গেরুয়া সঙ্গ। গত লোকসভা নির্বাচনের পর যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তাদের হাতছাড়া হয়েছিল একে একে সেগুলি পুনরুদ্ধার করছে তৃণমূল। যেমন দিন দুয়েক আগেই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গড়ে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ চালায় তৃণমূল। যার জেরে ঘাসফুল শিবিরে ফিরেছেন ভাটপাড়া পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর। লোকসভার পর বিজেপিতে চলে গেলেও অচিরেই যাঁদের মোহভঙ্গ হয়েছে।
ওই ১২ জন কাউন্সিলর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে ভাটপাড়ার হাওয়াটাই যেন বদলে গেছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত থাকা বিজেপির দাপট এখন কোথায় যেন মিলিয়ে গেছে। বিজেপি কর্মী, কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে যে পুরসভা গমগম করত। আজ তা যেন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে। আর অন্যদিকে, গেরুয়া-সন্ত্রাসের জেরে ঘরের কোণে লুকিয়ে থাকা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা বৃহস্পতিবার থেকেই নব উদ্যমে দলীয় কাজে নেমে পড়েছেন। জানা গেছে, আজ, শুক্রবার তৃণমূলের ১৭ জন কাউন্সিলর উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করতে পারেন। সূত্রের খবর, এদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন আরও ৬ কাউন্সিলরও।
ভাটপাড়ায় বিজেপির এমন বেহাল দশা দেখে বেজায় খুশি ২৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যেন রায়। গোলঘর হাসপাতালের কাছে নিজের বাড়িতে বসে তিনি বললেন, ‘বিজেপির খেলা শেষ। যেভাবে ওরা দিনের পর দিন ভাটপাড়ায় অত্যাচার চালিয়েছে, মানুষ তা ভুলে যায়নি। তৃণমূল করার অপরাধে বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার বাড়ি ভাঙচুর করে। মেরে আমার হাত ভেঙে দেয়। তবুও আমি দল ছাড়িনি। আমাদের মাথার ওপর আছেন ফিরহাদ হাকিম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, নির্মল ঘোষ, সর্বোপরি আমাদের সকলের দিদি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’