মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলেন যে ‘এগিয়ে বাংলা’। এই তথ্য যে একেবারেই ভ্রান্ত নয়, একাধিক বার মিলেছে তার প্রমাণ। বিগত ৮ বছরে ১০০ দিনের কাজে পরপর তিনবার বাংলার মুকুটে উঠেছে সেরার শিরোপা। পঞ্চায়েত-গ্রামোন্নয়ন এবং রেশন ব্যবস্থাতেও সারা দেশের কাছে এ রাজ্য হয়ে উঠেছে রোল মডেল। শুধু তাই নয়। আর্থিক বৃদ্ধি থেকে কৃষি, স্বাস্থ্যের সূচক থেকে স্কুলে ছাত্র ভর্তি— প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, জাতীয় গড়ের থেকেও এগিয়ে মমতার রাজ্যই। এ কারণে কেন্দ্রের কাছ থেকে মিলেছে দরাজ সার্টিফিকেটও। এবার জঞ্জাল সাফাই অভিযানে রাজ্যের কাজের প্রশংসা করলেন কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরায়ণ সচিব দুর্গাশঙ্কর মিশ্র।
জঞ্জাল সাফাই নিয়ে পুরসভাগুলিতে বেসরকারি পরমার্শদাতা নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরায়ণ সচিব কলকাতায় এসে রাজ্যের ওই নয়া উদ্যোগের পর্যালোচনা করতে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, এ ক্ষেত্রে রাজ্যকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও কেন্দ্র ভাবতে পারে।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার নিজ উদ্যোগেই কেন্দ্রীয় ভাবে ১২৫টি পুরসভার জঞ্জাল সংগ্রহ করে ব্যবহারের উপযোগী করার ব্যাপারে তিনটি বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থাকে নিয়োগ করেছে। ওই সংস্থাগুলি হল, প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্স, কেপিএমজি এবং আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং। সংস্থাগুলি এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সাহায্য করবে। প্রাথমিক ভাবে ৮৫টি পুরসভাকে চিহ্নিত করে সেগুলি জঞ্জালমুক্ত রাখতে পরিকল্পনা তৈরিতে বেসরকারি পরমার্শদাতা নিয়োগ করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওই সব পুরসভার ৮৬ শতাংশ ওয়ার্ডেই পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জঞ্জাল সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। ১৯ শতাংশ ওয়ার্ড গৃহস্থের বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে পৃথকীকরণের কাজ শুরু করেছে। যাতে এক দিকে পচনশীল জঞ্জাল এবং অন্য দিকে প্লাস্টিক ও কার্ডবোর্ড-সহ অপচনশীল জঞ্জালকে গৃহস্থের বাড়ি থেকেই আলাদা ভাবে সংগ্রহ করা যায়।
কেন্দ্রীয় সচিব রাজ্যের এই নয়া উদ্যোগ নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠকে বলেন, ‘গত এক বছর ধরে পুর এলাকাকে জঞ্জালমুক্ত করতে পশ্চিমবঙ্গ খুব ভালো কাজ করছে। বিশেষ করে গঙ্গা তীরবর্তী পুরসভাগুলিতে এর প্রতিফলন ঘটেছে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার আর্থিক সাহায্যের প্রস্তাব বিবেচনা করবে।’ সেই জন্য তিনি রাজ্যের পুর দফতরের আধিকারিকদের গোটা প্রকল্পের বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাতে বলেন।