প্রথম মোদী সরকারের আমল বারবারই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে এ রাজ্য। সেই ধারা বজায় রয়েছে মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসেও। এবার যেমন জয়েন্ট এন্ট্রান্স (মেন) পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও ব্রাত্য বাংলা ভাষা। এখন থেকে শুধু ইংরেজি, হিন্দি ও গুজরাতি ভাষায় তৈরি হবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রশ্নপত্র। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি(এনটিএ)-র নয়া নির্দেশিকায় এই ত্রিভাষায় প্রশ্নপত্র তৈরি হওয়ার কথা বলা হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। জয়েন্টের প্রবেশিকায় পরীক্ষা আঞ্চলিক ভাষায় কেন হবে না, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি সরকারের এ হেন বাংলা বিরোধী সিদ্ধান্তে জমে উঠেছে হিন্দুত্বের রাজনীতি। আর সেই রাজনীতির মোকাবিলায় তৃণমূল শান দিচ্ছে বাঙালি অস্ত্রে। বাংলা ও বাঙালির অধিকার নিয়েই এবার সরব হতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। মঙ্গলবার বিকেলে টুইটারে অভিষেক বলেন, ‘ভারতের সংবিধানে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাহলে কেন জয়েন্টের প্রবেশিকায় পরীক্ষায় ইংরেজি, হিন্দি ও গুজরাতি থাকবে? ২০২০ সালে জয়েন্টে বাঙালি, উডিয়া, কানাড়া, তেলেগু, তামিল, মারাঠি ভাষাকেও সামিল করতে হবে। যে কোনও ধরনের ভাষা বৈষম্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪ বিরোধী।’ কেন জয়েন্টের প্রশ্নপত্র সবকটি আঞ্চলিক ভাষায় হবে না, তা নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেও সরব হতে চলেছেন অভিষেক।
উল্লেখ্য, লোকসভা ভোটের শেষ দফার আগেও বাঙালির ‘পরিচয়’কে ‘বর্ণ’হীন করতে চাওয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। অমিত শাহের রোড শো চলাকালীন কলেজস্ট্রিটে বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি ভাঙা নিয়ে শোরগোল তুলেছিল তাঁর দল। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বহিরাগতদের এনে বাঙালি সংস্কৃতির উপরে আগ্রাসন চালাতে চাইছে বিজেপি। কলকাতার রাস্তায় বিদ্বজ্জনেদের নিয়ে পদযাত্রা করেছিলেন মমতা। স্লোগান তুলেছিলেন, জয় বাংলা। যা বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’কে রোখার পাল্টা মন্ত্র হয়ে উঠেছিল। বাংলার মুখ হয়ে সেই রেশ ধরে রাখতে চাইছে তৃণমূল। তাই ছটপুজোয় রবীন্দ্রসরোবরের দরজার তালা ভাঙা নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন অভিষেক। মনে করিয়ে দিয়েছেন, উৎসবের নামে গুন্ডামি করা অনুচিত। এবার বাংলার স্বার্থে আরেক ভাষা আন্দোলনে নামতে চলেছে তৃণমূল।