দিন কয়েক আগেই দারিদ্রের মনস্তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করে নোবেল পেয়েছেন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে যখন মেতে গোটা দেশ, ঠিক সেসময়ই জানা গিয়েছিল, মোদীর ‘আচ্ছে দিনে’ বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান হয়েছে ১০২ নম্বরে। অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা৷ আর এবার খোদ কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশিত জাতীয় সমীক্ষা রিপোর্ট ‘ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল-২০১৯’ থেকে জানা গেল, ভারতের ৯০ শতাংশেরও বেশি কমবয়সি শিশু পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে না। দিন কয়েক আগেই ‘শিশুদের খাওয়ানোর ধরন’ বা ‘চাইল্ড ফিডিং প্র্যাকটিস’ শীর্ষক সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
যখন বাচ্চাদের একান্তই মায়ের দুধ খাওয়ার পর্ব সবেমাত্র শেষ হচ্ছে, সেই সময় বা ঠিক ছ’মাসের পর থেকে ২ বছরের আগে বা ২৪ মাস পর্যন্ত খাওয়ার পরিসংখ্যান তুলে রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের মাত্র ৯.৬ শতাংশ এই বয়সের শিশু ঠিকমতো খাদ্য পায়। ৯০.৪ শতাংশ শিশুই পর্যাপ্ত খাদ্য পাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, ৩৪০ পাতার ওই সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে এ-ও জানা যাচ্ছে, ছয় থেকে ২৩ মাসের যেসব বাচ্চারা মায়ের দুধ খেয়েছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৮.৭ শতাংশ পর্যাপ্ত খাবার পেয়েছে। অন্যদিকে, যেসব বাচ্চারা মায়ের দুধ পায় না বা খায় না, তাদের খাওয়ানোর ধরন নিয়েও এই সমীক্ষায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট জানাচ্ছে, মায়ের দুধ না খাওয়া বাচ্চাদের ৮৫ শতাংশের বেশি পর্যাপ্ত খাবার পায় না।
সার্বিকভাবে এই করুণ চিত্রের মধ্যেও এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি রাজ্য তুলনামূলক ভাল ফল করেছে। তার মধ্যে রয়েছে বাংলাও। এ রাজ্যে মায়ের দুধ না পাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে প্রতি চারটিতে একটি (২৫.৭ শতাংশ) পর্যাপ্ত খাবার পায়। আর মাতৃদুগ্ধ পান করা শিশুদের প্রতি পাঁচটি বাচ্চার মধ্যে একটি পর্যাপ্ত খাদ্য পেয়ে থাকে। বাচ্চাদের সার্বিক পুষ্টিকর খাদ্য দেওয়ার বিষয়ে সর্বাগ্রে রয়েছে তামিলনাড়ু। সারা দেশে যেখানে মাত্র ৯.৬ শতাংশ ছ’মাস থেকে ২৩ মাসের শিশু পর্যাপ্ত খাদ্য পায়, সেখানে তামিলনাড়ুর ৩০.৭ শতাংশ এই বয়সি বাচ্চা পর্যাপ্ত খাদ্য পায়। বাংলার ক্ষেত্রে যা ১৯.৬ শতাংশ। আবার ৬ থেকে ৮ মাস বয়সি বাচ্চাদের খাওয়ার ধরন নিয়ে সমীক্ষা রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়েছে এই ন্যাশনাল হেলথ প্রোফাইল ২০১৯-এ। সেখানেও বাংলার ফলও বেশ ভালই। ৫২ শতাংশ।