এই মুহূর্তে মোদী সরকারের সঙ্গে কার্যত সঙ্ঘাতে জড়িয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। এবার রাজনের পথে হেঁটেই ভারতের অর্থনীতি নিয়ে মুখ খুললেন বিরল আচার্য। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধীনতা নিয়ে সর্বপ্রথম বিতর্ক শুরু হয়েছিল যাঁর হাত ধরে।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর এই প্রথম মুখ খুলেই বিরল বললেন, সরকারের ব্যয় নিয়ে আরও বেশি আলোচনা হওয়া জরুরি। তৈরি করা উচিত এমন ব্যবস্থা (ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিস্কাল মনিটর), যারা স্বাধীন ভাবে রাজকোষে নজরদারি চালাবে। কোনও প্রকল্প ঘোষণার পরের দু’মাসের মধ্যে তারা সেটির অডিট করবে এবং পরবর্তী পাঁচ বছরে সেটি কার্যকরের জন্য অর্থের সংস্থান করতে কেন্দ্রকে কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা জানাবে।
প্রসঙ্গত, গত মাসেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজকোষ ঘাটতির আড়ালে অনেক কিছু ধামাচাপা দিয়ে রাখার অভিযোগ তুলেছিলেন রাজন। আর সম্প্রতি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় অর্থনীতি ও তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সভায় বিরল জানান, কেন্দ্রের ব্যয়ের ক্ষেত্রে ওই স্বাধীন ব্যবস্থাই আয়নার কাজ করবে। ‘নানা অজুহাতে’ ক্রমাগত কোনও লক্ষ্যমাত্রা বদলানো হলে, তা ফুটে উঠবে সেখানেই।
ঢিমে বৃদ্ধি শুরু করে শিল্পোৎপাদন ও পরিকাঠামোর পরিসংখ্যানে চিন্তা বাড়ছে কেন্দ্রের। মাথাব্যথা বাজারে গাড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ভোগ্যপণ্যের চাহিদা কমাও। এই অবস্থায় বাজারে চাহিদা বাড়াতে জমি, শ্রম ও কৃষি সংস্কারের পথে কেন্দ্রকে হাঁটতে হবে বলেও মনে করেন আচার্য।
প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নরের মতে, দেশের বর্তমান মধ্যবিত্ত শ্রেণি সারা জীবন ১০ শতাংশ হারে পণ্য কিনতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে চাহিদা বজায় রাখতে আরও অন্তত ২০-৩০ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার উপরে তুলে আনতে হবে। কেন্দ্রকে অনেক কিছু করলেও, সে জন্য আসলে চাই মূল্যবৃদ্ধি বাদে প্রকৃত আয় বাড়ানো ও উন্নত জীবনযাত্রার ব্যবস্থা করার মতো সংস্থার। তাঁর আশঙ্কা, তা না-হলে ভারত মধ্য আয় ও বৃদ্ধির দেশ হিসেবেই থেকে যাবে। বর্তমান অবস্থায় যার সম্ভাবনা প্রবল।