কাজের সুবিধার জন্যে এবার এক বড় পদক্ষেপ নিল মমতা সরকার। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ১০ হাজার মহিলা কর্মীর হাতে তুলে দেওয়া হল আধুনিক ট্যাব। এই ব্যবস্থাতে খুশি সকলেই।
গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্যতম স্তম্ভ এএনএম-আর কর্মী বা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিমেলদের ৪০-৪২টি রেজিস্টার খাতার ভারমুক্ত করতেই এইসিদ্ধান্ত। এই ব্যবস্থার ফলে বাচ্চাদের টিকাকরণের আলাদা খাতা, যক্ষ্মা কর্মসূচির আলাদা খাতা, ক্লিনিক রেজিস্ট্রার আলাদা, স্টক রেজিস্টার আলাদা—রোজ ৪২টা খাতায় হিসেব আপডেট করা থেকে মুক্তি পেলেন কর্মীরা। দফতরও ভেবেছে, আজকের আধুনিক যুগে এতগুলি জাবদা খাতায় রোজ তথ্য ভরানোর কাজে কর্মীদের অহেতুক সময় নষ্ট হচ্ছে। অন্য কাজে মন দিতে পারছেন না তাঁরা। এর ফলে সময়ও বাঁচবে এবং নির্ভুল ভাবে কাজও করা যাবে।
মমতার উদ্যোগে রাজ্যের ১০ হাজার ৩৫৬ জন এএনএম-আর স্বাস্থ্যকর্মীর হাতে আধুনিক ট্যাব তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পুজোর আগে ট্যাব কেনার সরকারি প্রক্রিয়া ও টেন্ডার সম্পূর্ণ হয়ে যায়। পুজোর ছুটি শেষে দফতর খোলার পরপরই রাজ্যের সব ক’টি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মাধ্যমে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মতো প্রান্তিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ভরকেন্দ্রে কাজ করা ১০ হাজারের বেশি কর্মীর হাতে তুলে দেওয়া হল এই ট্যাব।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, জানুয়ারি থেকে এই পরিষেবা চালু করে দেওয়া হবে। এতগুলি করে খাতায় রেকর্ড রাখা সত্যিই কষ্টসাধ্য কাজ। এরপর থেকে এএনএমদের একটি ট্যাব ৪০টি খাতার রেকর্ড বহন করবে। ওঁদের পক্ষে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতেও সুবিধা হবে। ফাস্ট এএনএম বা হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিমেলদের রাজ্যব্যাপী সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল এএনএম-আর এমপ্লয়িজ সোসাইটির রাজ্য সম্পাদিকা রেখা সাহু বলেন, সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের নার্সিং ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত করা এবং খাতার বহর কমানো—এই দুটি দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। তবে এখনও ট্যাবে কোনও কানেকশন পাইনি। হয়তো শীঘ্রই চালু হবে।
এক শীর্ষকর্তা বলেন, এখনও এইসব ট্যাবে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি। প্রথমে প্রশিক্ষণ হবে। তারপর নেট সংযোগ দিয়ে চালু করা হবে। কিন্তু, সরকারি ট্যাব দিয়ে যদি কেউ হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক করেন? যদি ব্যক্তিগত ফোন করেন, চ্যাট করেন? উত্তরে হাসতে হাসতে ওই স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, শুধু সরকারি কাজকে সহজ করতে ও কাজে গতিতে আনতে এই ট্যাব দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বন্ধ রাখব এখানে। কলিং অপশন দেওয়া হবে, তবে খুব সীমিতভাবে এবং দপ্তরের কাজের জন্য। তাই গল্প করার সুযোগ থাকবে না!