উৎসবে আনন্দে কোনো বেড়াজাল নেই। সেখানে সবাই সমান, সবাই মানুষ। সেখানে নেই কোনো জাতপাতের সমীকরণ, নেই কোনো ধর্মের ভেদাভেদ। এমনই এক চিত্র দেখা গেল পশ্চিম বর্ধমানের সীতারামপুরে। এখানে ছট পুজোর আনন্দ তাই একই সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন হিন্দু ও মুসলিম মা-বোনেরা। গঙ্গাস্নান করে বিধিমতো পুজোর রীতি পালন করেছেন যৌনকর্মীরা।
“সারা বছর যৌনপল্লির অন্ধকারেই দিন কাটে। সমাজও বাঁকা চোখে দেখে। কিন্তু ছট পুজোর এই দু’দিন সকলেই এক। পুজোর রীতিতে জাতপাত, পেশা, উঁচু-নিচুর বিভেদ নেই,” রাস্তায় দণ্ডী কেটে সাষ্টাঙ্গ সূর্যপ্রণাম করতে করতে বলেছেন এক যৌনকর্মী। সীতারামপুরের যৌনপল্লির হিন্দু মহিলাদের সঙ্গে মুসলিম মহিলারাও একই ভাবে ব্রত পালন করেন। “এখানে আমরা সবাই মিলেমিশে থাকি। কার কী ধর্ম সেটা মনেও রাখি না। উৎসব-পার্বণে একই সঙ্গে ব্রত রাখি। আজও তাই রেখেছি,”একমাথা ঘোমটা টেনে হাতে মেহেন্দি পরা মহিলা জানালেন তিনিও একজন যৌনকর্মী।
নিয়ামতপুরের কামারবাঁধে আবার দেখা গেছে অন্যচিত্র। শুক্রবার সন্ধে থেকেই সেখানে ঘাট পরিষ্কারের কাজে নেমেছিলেন এলাকার মুসলিম ভাইয়েরা। কলাপাতা, রঙিন কাগজে ঘাট সাজিয়েছিলেন তাঁরাই। হিন্দু মা –বোনেদের সঙ্গে তাঁদের পরিবারও সে সামিল হবে সূর্যপ্রণামে! একই মন্ত্র উচ্চারণে অর্ঘ্য নিবেদন করবেন দুই ধর্মের মানুষই। “ছটপুজো আমাদের সবার উৎসব। হিন্দু-মুসলিম বলে কোনও ভেদ নেই। আমাদের হিন্দু ভাইয়েরা যেমন রোজা রাখেন, আমরাও তেমনি ছটে উপোস করি,” জানাচ্ছেন কামারবাঁধেরই এক মুসলিম ভাই। ছটের পর্ব মিটলে ঘাট সাফাই করার দায়িত্বও তাঁদেরই।