বিধানসভার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহেরও বেশি। কিন্তু মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে এখনও তুঙ্গে শিবসেনা-বিজেপি কাজিয়া। সরকার গড়া নিয়ে সমঝোতা তো দূরের কথা, ইতিমধ্যেই শরিক দলের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছে শিবসেনা। সুর চড়িয়েছে তাদের ঔদ্ধত্য নিয়েও। এবার বিজেপির বিরুদ্ধে ‘মুঘলদের মতো হুমকি’র অভিযোগ আনল তারা।
তাদের স্পষ্ট মত, এই ‘হুমকি’ অসাংবিধানিক, গণতন্ত্রের পক্ষে অশুভ। শিবসেনার পক্ষ থেকে দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-য় লেখা হয়েছে, ‘আইন বা সংবিধান কারও দাসানুদাস নয়। মহারাষ্ট্রের মানুষ খুব ভাল জানেন, এই অচলাবস্থার জন্যে আমরা দায়ী নই। হুমকিগুলি মুঘল জমানার মতো শোনাচ্ছে। আমরা আইন ভাঙব না, সংবিধান লঙ্ঘন করব না।’
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রে বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৮ নভেম্বর। তার আগে এখনও পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীত্ব নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি বিজেপি বা শিবসেনা। শিবসেনার দাবি, মহারাষ্ট্রের মানুষ চান মুখ্যমন্ত্রী হোক তাঁদের দল থেকেই। এমনকি বিজেপিকে বাদ দিয়ে সরকার গড়তে পারে শিবসেনা, এমন হুঙ্কারও শোনা গিয়েছে। অন্য দিকে বিজেপি দেবেন্দ্র ফড়নবীসকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইছে।
আর দুই শরিকের এই দ্বৈরথেই কার্যত থমকে গিয়েছে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা গঠন। আর এরই মধ্যে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুধীর মুনগন্তীওয়ার এই অবস্থাতেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এতেই চটেছে শিবসেনা। দলীয় মুখপত্রে লেখা হয়েছে, ‘যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে না, তাঁদের মুখেই আবার রাষ্ট্রপতির শাসনের হুমকি। এদের আচরণ এমন, যেন শাসক হিসেবই তারা জন্মেছে।’
যুযুধান দুইপক্ষের মধ্যে যখন এই উষ্ণ সওয়াল জবাব, তখন এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করেছে। শুক্রবার পাওয়ার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে শিবসেনাকে আরও উস্কে দিতে বলেছেন, ‘শিবসেনা বলছে ৫০-৫০ ফর্মুলার প্রতিশ্রুতি পেয়েই ভোট ময়দানে নেমেছিল। বিজেপির উচিত সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা।’ এতে যে আগুনে আরও ঘি পড়েছে তা বলাই বাহুল্য।