সেই মহাত্মা গান্ধী থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতা-নেত্রীই হোক বা অর্মত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নোবেলজয়ী- বারবারই এ হেন ব্যক্তিত্বদের প্রতি অশালীন মন্তব্য উড়ে এসেছে গেরুয়া শিবির থেকে। এবার সেই তালিকায় সংযোজন হল মাদার টেরিজার নামও। শুক্রবার নোবেল শান্তি পুরষ্কার জয়ী এই মনীষিকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করলেন আসামের আরএসএস নেতা রঞ্জিব শর্মা। তাঁর দাবি, মাদার টেরিজার সঙ্গে ইউরোপ ও আমেরিকার ড্রাগ মাফিয়াদের সম্পর্ক ছিল!
এদিন গুয়াহাটি থেকে প্রকাশিত তাঁর বই ‘বৌদ্ধিক সন্ত্রাস’-এ টেরিজাকে ‘প্রতারক’ বলে বর্ণনা করে অভিযোগ করা হয়, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচারে যুক্ত ছিলেন তিনি। ৭টি প্রবন্ধ আছে বইটিতে।যেখানে এ-ও বলা হয়েছে, ১৯৫০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারতে কম করে ৫০০ বৈজ্ঞানিক খুন হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পে ভরা বইটিতে বিশ্ববন্দিত ‘সেন্ট’ মাদার টেরিজা সম্পর্কে বলা হয়, ‘সেবা নয়, খ্রিস্টানদের ভাবমূর্তি গঠনই ছিল তাঁর লক্ষ্য। সেই ভাবমূর্তি ভাঙিয়ে টাকা রোজগারের পাশাপাশি ছিল হিন্দুদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরকরণ।’
গুয়াহাটির পান বাজারের এমআর পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত বইটিতে আরও বলা হয়েছে, কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত রোগীদের ভিক্ষে করিয়ে সেই অর্থ বিদেশে রবার্ট ম্যাক্সওয়েলের কাছে পাঠাতেন টেরিজা। আবার ইউরোপ ও আমেরিকার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে অর্থ এনে তা ভারতীয় টাকায় বদল করতেন। শুধু তাই নয়। টেরিজার গড়া রাঁচির ‘নির্মল হৃদয়’ নিয়েও কটাক্ষ করা হয়েছে বইটিতে।
বিশ্বনাথ চারিয়ালির বাসিন্দা রঞ্জিব নিজেকে আসামে আরএসএস-এর ‘সম্পর্ক প্রমুখ’ বলে দাবি করে থাকন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর এই বই তথ্যের ভিত্তিতে লেখা। এবিষয়ে কংগ্রেসি ও বামপন্থীদের প্রকাশ্যে বিতর্কে চ্যালেঞ্জও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ভারতীয় বিজ্ঞানীদের মার্কিন ও রুশ গোয়েন্দারা খতম করলেও নীরব থেকেছে কংগ্রেস। বামেরা সেই খুনকে সমর্থন করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
রঞ্জিব নিজেই তাঁর বই নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা পাঠান। সেখানে উল্লেখ করা হয় বিভিন্ন বিদেশি মিডিয়ার কথাও। তাঁর পাঠানো তথ্য অনুযায়ী বইটিতে রয়েছে, বিজ্ঞানী হত্যার কাহিনী, ইয়োরোপ–আমেরিকার ড্রাগ মাফিয়াদের সঙ্গে টেরিজার সম্পর্কের বর্ণনা, মিশনারিজ অফ চ্যারিটির শিশু সরবরাহ, গণধোলাইয়ের আড়ালে থাকা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ইত্যাদি। বইটি প্রকাশ হতেই আসামে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন সংগঠনের তরফে বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিও জানান হচ্ছে।