শুরু হতে চলেছে শীতের মরশুম। আর শীত মানেই দেদার খাওয়াদাওয়া। ফুলকপি, বাঁধাকপি, নতুন আলু, কড়াইশুঁটি ইত্যাদি সব্জী দিয়ে মনবাহারি নানা পদ। যা পাতে পড়লে এক নিমেষে থালা খালি হওয়ার সঙ্গে মনও যে ভরবে তা তো বলাই বাহুল্য। তাই আজ রইল শীতকালের নতুন কিছু পদ।
ফুলকপির পোলাও
বাজারে উঠতে শুরু করেছে ফুলকপি। চমৎকার স্বাদের এই সব্জীটি খেতে পছন্দ করেন সবাই। ফুলকপি দিয়ে তৈরি করা যায় মজার সব খাবার। তেমনই একটি পদ ফুলকপির পোলাও। জেনে নিন রেসিপি-
উপকরণ:
মাঝারি ফুলকপি ১ টি, আলু ২ টি, কাজুবাদাম ১০ টি, কিসমিস ২০ টি, জিরে গুঁড়ো ১/২ চামচ,ধনে-জিরে বাটা ১ চামচ, হলুদ ১/২ চামচ, মরিচের গুঁড়ো ১/২ চামচ, লবণ স্বাদমত, চিনি ২ চামচ, রিফাইন্ড তেল ২ টেবিল চামচ, গোবিন্দভোগ চাল ১ কাপ, গরম মশলা গুঁড়ো ১/২ চামচ, ঘি ২ চামচ।
প্রণালি:
চাল জলে ভিজিয়ে ঝরিয়ে রাখুন। ফুলকপি এবং আলু কেটে নিন। মাঝারি আঁচে পাত্রে তেল গরম করুন। জিরে ফোড়ন দিয়ে কয়েক সেকেন্ড নাড়াচাড়া করে ফুলকপি এবং আলু দিন। তারপর লবণ দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করুন। মাঝে মাঝে নেড়ে দেবেন।ফুলকপি এবং আলু নরম হয়ে এলে ধনে-জিরে বাটা, হলুদ, মরিচের গুঁড়ো দিয়ে কয়েক মিনিট ভাজুন। তারপর ভেজানো চাল, কাজুবাদাম এবং কিসমিস দিয়ে আস্তে আস্তে ভালো করে মেশান। তারপর আরও ৫ মিনিট ভাজুন। এরপর জল দিন। ১ কাপ চালে ২ কাপ জল দেবেন। অনবরত নাড়তে থাকুন যাতে ধরে না যায়। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে চিনি ও গরম মশলা দিন। জল শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত কয়েক মিনিট ঘি ছড়িয়ে নাড়াচাড়া করুন। এরপর গরম গরম পরিবেশন করুন।
বাঁধাকপি ছাড়া যেন শীতকাল অসম্পূর্ণ। তাই শীতের খাবারের অধ্যায়ে বাঁধাকপি থাকবে না তা আবার হয় নাকি। তাই রইল বাঁধাকপির এক নতুন অথচ ভীষণ সহজ এক রেসিপি। যার নাম বাঁধাকপির কিমচি।
যা যা লাগবে:-
মাঝারি বাঁধাকপি– অর্ধেকটি (কিউব করে কাটা), নুন ,চিনি– ৩ চামচ করে, লাললঙ্কা গুঁড়ো – দেড় চা চামচ
(কাশ্মিরী লাল মরিচ হলে রঙ সুন্দর হবে), চিলি ফ্লেকস– ১ চা চামচ, সয়াসস– ২-৩চামচ, থেঁতো করা আদা– ১ ইঞ্চির ১ টুকরো, থেঁতো করা রসুন– ৫-৬ কোয়া, পেঁয়াজ বাটা- ১ টেবিল চামচ
প্রণালী
কপিকে প্রথম পর্যায়ে চারকোনা করে কেটে নিতে হবে।তবে কপির মোটা শিরগুলো নেয়া যাবেনা।ওগুলো ফেলে দিতে হবে।সব কাটা হয়ে গেলে কপিগুলোকে ভালো করে ছাড়িয়ে নিতে হবে। এবার অল্প গরম জলে কপিগুলো ভিজিয়ে রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে জল যেন বেশি গরম না হয় এবং ২কাপ জল যথেষ্ট। এবার কপিগুলোতে একটি কাপের ৪ভাগের এক ভাগ নুন মেশাতে হবে।এবার জলে ১/২ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। অন্যদিকে মরিচ বাটা, রশুন,আদা,পিয়াজ বাটা একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। কপিগুলোকে ১/২ঘন্টা পর জল থেকে ছেঁকে নিয়ে আদা,রশুন ও মরিচের মিশ্রণটি ভালো করে মাখিয়ে নিতে হবে কপিগুলোর সাথে। এবার এই কপিগুলো একটি কাঁচের জারে চেপে চেপে ভরে নিতে হবে এবং কপি ভেজানো সেই জল থেকে ১কাপ পরিমানের জল কপির জারে দিয়ে দিতে হবে। নুন কম হলে পরিমান মতো কিছু নুন দিতে হবে। এবার এই কপির মিশ্রনটি ২৪থেকে ৩২ঘন্টা জারের মুখ লাগিয়ে রেখে দিতে হবে সাধারণ স্থানে। ২৪/৩২ঘন্টা পর তৈরি হয়ে যাবে বাধাকপির কিমচি। এই কিমচিটি ভাতের সাথে বা পোলাউয়ের সাথে বা নুডুলসের সাথে স্যালাড হিসেবে খাওয়া যায়।এটা ঝাল,নোনতা টাইপের কচকচে স্বাদের কিমচি।
শীতকালের আর এক অন্যতম সব্জী হল কড়াইশুঁটি। ধোকার ডালনা কে না ভালবাসে, তবে সেই ধোকা কে আরও সুস্বাদু বানাতে এই রেসিপি। যার নাম কড়াইশুঁটির ধোঁকা। এই রান্নায় ধোকা বানাতে ছোলার ডাল এর সাথে সাথে কড়াইশুঁটিও ব্যাবহৃত হয়।
উপকরণ
১ কাপ কড়াইশুঁটি, ১ কাপ ছোলার ডাল, ১ চা চামচ হিং, ১ চা চামচ আদা বাটা, ২ টি কাঁচালঙ্কা, ১চা চামচ জিরে গুঁড়ো, ১চা চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো, ১ ইঞ্চি গোটা আদা, ১/২চা চামচ গোটা জিরে, ১/২ চা চামচ মৌরি, ১/২ চা চামচ কালোজিরে, ১টি তেজপাতা, ১/৪ চা চামচ গরম মশলা গুঁড়ো, ১/২ চা চামচ ঘি, ১ কাপ সর্ষের তেল।
প্রণালী
প্রথমে কড়াইশুঁটি ও ভিজিয়ে রাখা ছোলার ডাল আদা ও কাঁচালঙ্কা সহ মিক্সিতে বেটে নিতে হবে মিহি করে। এরপর কড়াই এ তেল গরম করে তাতে ভাঙা মৌ্রি ও কালোজিরে এবং অল্প হিং ফোড়ন দিয়ে এই মিশ্রন ঢেলে খুব ভালো করে নেড়ে একটি মন্ডের আকারে বানিয়ে নিতে হবে। ওই মন্ড টি ছড়িয়ে দিয়ে ঠান্ডা হওয়ার আগেই ওর থেকে বরফির আকারে ছোট ছোট টুকরো কেটে নিতে হবে। এরপর এই বরফি গুলি গরম তেলে সাবধানে ভেজে নিতে হবে। এবার ওই এক ই তেলে তেজপাতা, হিং ও জিরে ফোড়ন দিয়ে তাতে আদা বাটা, জিরে গুঁড়ো, হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো জলে গুলে দিয়ে দিতে হবে এবং মশলা কষাতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা থেকে তেল বেড়োচ্ছে। এবার এতে নুন চিনি দিতে হবে এবং ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ঝোল ফুটতে দিতে হবে। এই সময় চাইলে এতে ভাজা আলুর টুকরোও দেওয়া যায়। এবার ঝোল ফুটে গেলে ভাজা ধোকা গুলো দিয়ে আরও ২-৩ মিনিট কম আঁঁচে রান্না হতে দিয়ে, ঘি গরম মশলা দিয়ে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।