আর্থিক ক্ষেত্রে দেশকে সমস্যায় ফেলে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। দেশের মানুষের কাছ থেকে সেই ছবি আড়াল করতেই নানা রকম ফন্দিফিকির করে চলেছে বিজেপি। কখনও ধর্মের হিড়িক দিয়ে কিংবা অন্য নানা রকম পন্থায়। এবার ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মানস ভুঁইয়া। কেলেঘাই–কপালেশ্বরী প্রকল্পের বকেয়া টাকা আদায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্দোলনে নামতে চলেছেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া।
কেলেঘাই–কপালেশ্বরী প্রকল্পের বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তাঁর স্পষ্ট কথা, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের কাশ্মীর ঘুরিয়ে দেখানো হল, আরো নানা পন্থায় সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চাইলেও দেশের মানুষ সবই বুঝতে পারছেন। দেশের মানুষের যাতে ভাল হয়, তেমন কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না করে সরকার শুধুই চমক দিয়ে চলেছে”।
২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে এই আন্দোলন। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার পাশাপাশি ২ লক্ষ মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার বকেয়া টাকা না দেওয়ায় মাঝপথে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রকল্পের কাজ। কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, চণ্ডীয়া নদী ও বাগুই খাল পুরোপুরি সংস্কার না হওয়ার ফলে সবং, পিংলা, খড়্গপুর (গ্রামীণ), নারায়ণগড়, ভগবানপুর, পটাশপুর ব্লকের ২ লক্ষাধিক মানুষের জীবন ও জীবিকায় আঘাত পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৮৫টি গ্রামের মানুষ।
রাজ্যসভার সাংসদ মানসবাবু বলেন, “দেশের আর্থিক অবস্থা করুণ। সেদিকে খেয়াল নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। এদিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাংসদদের এনে কাশ্মীর সফর করানো হচ্ছে। মানুষের কল্যাণে সরকারি প্রকল্পে টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এর বিরুদ্ধেই আন্দোলন তৈরি করতে হবে। যাতে থেমে থাকা প্রকল্পের কাজ ফের শুরু করা যায়”। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার প্রজেক্ট রিপোর্ট দেখে কেলেঘাই–কপালেশ্বরী প্রকল্পের জন্য ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। প্রথম দফায় ১৫০ কোটি টাকা, দ্বিতীয় দফায় ২২৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়। ২০১৪ সালে মোদী সরকার এসে সেই বরাদ্দের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া হয়। বারবার চিঠি দিয়েও কোনও লাভ হয়নি। কয়েক দফায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি এই প্রকল্পের বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে দরবারও করেছেন। আশ্বাস মিললেও কাজ কিছু হয়নি।