লোকসভা ভোটের সময় আসন নিয়ে ব্যাপক দর কষাকষি চলেছিল দু’পক্ষের মধ্যে। কিন্তু কোনও সমঝোতায় না আসায় শেষমেশ ভেস্তে গিয়েছিল জোট প্রক্রিয়া। তবে সব মতানৈক্য ঝেড়ে ফেলে এবার একসঙ্গে লড়াই করছে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। আর সেই যাত্রাটা শুরু হচ্ছে আসন্ন তিন বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন দিয়ে। গতকাল রিপন স্ট্রিটের ‘ক্রান্তি প্রেস’-এ দুই দলের মধ্যে হওয়া ২-১’এর সমঝোতা মতোই এবার করিমপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করল বামেরা।
বৃহস্পতিবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের পার্টি অফিসে প্রার্থী ঘোষণা করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। করিমপুরে কংগ্রেস সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী হচ্ছেন গোলাম রব্বি। উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে অবশ্য এই আসন সমঝোতা নিয়ে কম নাটক হয়নি। শেষ পর্যন্ত জোট প্রক্রিয়া ভেস্তে গেলেও বহরমপুর ও মালদা দক্ষিণে প্রার্থী দেয়নি বামেরা। ২টি কেন্দ্রেই জিতেছে কংগ্রেস। উলটো দিকে যাদবপুর কেন্দ্রে প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। রাজ্যের একমাত্র কেন্দ্র হিসাবে সেখানে দ্বিতীয় হয়েছে বামেরা।
তবে লোকসভা নির্বাচনের ভুল বিধানসভা নির্বাচনে করে বিজেপি ও তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে নারাজ বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই এবার রীতিমতো সমীকরণ মেনে জোট করেছেন তাঁরা। জোটের শর্ত হিসাবে ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত যে দল যে কেন্দ্রে বেশিবার জিতেছে প্রার্থী দেবে সে-ই। সেই সমীকরণ মেনে খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। আর করিমপুরে প্রার্থী দেবে বামেরা। জোট সমীকরণ খোলসা করে বিমান বলেছেন, খড়গপুরে কস্মিনকালে বামেরা জেতেনি। তাই সেখানে প্রার্থী দেওয়ার দাবি তোলা অনুচিত। উলটো দিকে কালিয়াগঞ্জেও কংগ্রেসের পাল্লা ভারী।
আগামী ২৫ নভেম্বর খড়গপুর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুর বিধানসভা উপ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। খড়গপুরের বিধায়ক রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মিত্রও লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেসি বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যুতে আসনটি খালি হয়েছে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে বিমান খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে বাম কর্মী-সমর্থকদের সক্রিয় হতে নির্দেশ দেন। সঙ্গে বলেন, ‘বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী ভোট যাতে ভাগ না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’