বাংলায় থেকে বাংলার সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচরণ করছে বিজেপি। প্রতিমা বিসর্জনে বাধা দিচ্ছে বিজেপি। গঙ্গা ছটপুজোয় বিধিনিষেধ চাপিয়ে দিচ্ছে তারা। এদিন পোস্তবাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে দাবি করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই থেমে থাকেননি। তাঁর প্রশ্ন, গঙ্গার ঘাটে ছটপুজো, বিসর্জন হবে না? মানুষ তাহলে যাবে কোথায়?
সারা দেশে হিন্দুত্ববাদ ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত নিয়েছে গেরুয়া শিবির। আর সেটা চাপিয়ে দেওয়ার জন্য যেকোন পর্যায়ে যাচ্ছে তাঁরা। তাঁদের এই মতবাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই মিলছে ‘হিন্দুবিরোধী’ কিংবা ‘দেশদ্রোহী’র তকমা। কিন্তু তাতেও এক পাও নিজের নীতি থেকে সরে আসেননি মমতা। এবার বিজেপিকে নিশানা করলেন তিনি। পরিবেশমন্ত্রক ও পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা তুলে ধরে মমতা বললেন, গঙ্গায় দুর্গাপুজো, সরস্বতী প্রতিমার বিসর্জন ও ছটপুজোয় বিধিনিষেধ চাপানো হয়েছে।
এদিন পোস্তায় মমতা বলেন, “গ্রিন বেঞ্চ অর্ডার দিয়েছে গঙ্গায় ছটপুজো করা যাবে না। বিহারে বলতে পারেন, পটনার গঙ্গায় ছটপুজো হবে না। পরিবেশমন্ত্রক থেকে নির্দেশিকা এসেছে, দুর্গাপ্রতিমা, সরস্বতীর বিসর্জন হবে না। ঘাটে ছটপুজো হবে না। কোথায় যাবে তাহলে? দুর্গা মায়ের বিসর্জন কোথায় হবে?”
তিনি আরও বলেন, ”পাঁচশো ঘাট তৈরি করে দিয়েছি। ঠাকুর বিসর্জন হয় সেখানে। পরিষ্কার করে দিই। কত সাফ করেছেন বেনারসে? আরবিআই, কেন্দ্রে টাকা থাকা সত্ত্বেও কেন গঙ্গা পরিষ্কার করলেন না? কাঠামো উঠিয়ে ফেলে দিই আমরা। ছট পুজোয় কিছু পড়লে সাফ করে দেব। গঙ্গা মায়ের পুজোয় লোকে কোথায় যাবে? সব বন্ধ হয়ে যাবে!”
পরিবেশ আদালতের রায় মমতার ব্যাখ্যা করে মমতা জানান, “আদালতের রায়কে সম্মান করি। সরকারের তো বলা উচিত, এটা কোটি কোটি লোকের ব্যাপার। ১০-১৫ কোটি লোক ছট পুজো করে। ১৫ কোটি মানুষ দুর্গাপুজো করেন। আমরা পুজো করব না? বিসর্জন হবে না? কোথায় যাব আমরা? এসব বললে অনেক কথা হয়ে যাবে। আমার কাছে নির্দেশিকা আসেই। পর্যালোচনা করতে বলি তখন। না হলে আদালতের রায় মেনে নিই। রবীন্দ্র সরোবর কত নির্দেশিকা এসেছে। আমি কোর্টের নির্দেশ মানি। কিন্তু ১০ লক্ষ লোক গেলে কি গুলি চালিয়ে যাবে? বিজেপি আমায় গ্রেফতার করো। কিন্তু গুলি চালাতে পারব না।” জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে এসে এইদিন মুখ্যমন্ত্রীকে পাওয়া গেল ‘রণংদেহী’ মেজাজে।