লোকসভা ভোটের সময় আসন নিয়ে ব্যাপক দর কষাকষি চলেছিল দু’পক্ষের মধ্যে। কিন্তু কোনও সমঝোতায় না আসায় শেষমেশ ভেস্তে গিয়েছিল জোট প্রক্রিয়া। তবে সব মতানৈক্য ঝেড়ে ফেলে এবার একসঙ্গে লড়াই করবে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। যাত্রাটা শুরু হচ্ছে আসন্ন তিন বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন দিয়ে।
ঢাক ঢাক, গুড় গুড় চলছিল দিন কয়েক ধরেই। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস কি একজোট হয়ে লড়াই করবে? তেলে-জলে কি আদৌ মিশ খাবে? প্রশ্নটা ছিল রাজনীতিমনস্ক সচেতন মানুষ থেকে আমজনতা – সকলেরই। বুধবার সন্ধেবেলাই মিলল এর উত্তর। গতকাল রিপন স্ট্রিটের ‘ক্রান্তি প্রেস’ থেকে বাম-কংগ্রেসের জোটের আনুষ্ঠানিক সীলমোহর দিলেন দু’দলের রাজ্য নেতারা।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ নভেম্বর কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর ও খড়গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তাতেই যে একজোট হয়ে লড়াই হবে, এটা প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল বাম-কংগ্রেসের মধ্যে। সেই পরিকল্পনাকে পূর্ণতা দিতে গতকাল সন্ধে ছ’টা নাগাদ বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি’র কার্যালয় ‘ক্রান্তি প্রেসে’ হাজির হন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য।
আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ বামফ্রন্টের শরিক দলের সব নেতৃত্ব। ঘণ্টাখানেক বাম-কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ আগামীতে পথ চলা নিয়ে আলোচনা করেন। তারপরই সাংবাদিক বৈঠক করে একজোটে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করেন নেতারা।
বিমান বসু জানান, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস একযোগে লড়াই করবে। পাশে বসা সোমেন মিত্রও বলেন, ‘আর কোনও ছন্দপতন নেই। আমাদের পথ চলা শুরু হল। তৃণমূল ও বিজেপিকে হটানোর লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলা থামবে না।’ বামেদের হাত ধরার ক্ষেত্রে কংগ্রেস সভানেত্রী সীলমোহর দিয়েছেন, তাও জানিয়ে দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
তিন আসনের উপনির্বাচনে ২-১’এ সমঝোতা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার দু’দলই আলাদাভাবে প্রার্থী ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন বিমান বসু ও সোমেন মিত্র। খড়গপুরে কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, কালিয়াগঞ্জে ধৃতশ্রী রায় এবং করিমপুরে সিপিএমের সম্ভাব্য প্রার্থী বাবুসোনা সরকার। সমঝোতা যখন হয়েছে, তখন দু’দলের যৌথ কর্মসূচীও হবে বলে ঘোষণা করা হয় গতকালের বৈঠকের পর।
তিন উপনির্বাচনের আসনভিত্তিক একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি তৈরি হচ্ছে। পরে অন্যান্য বিধানসভা ও রাজ্যভিত্তিক হবে বলেও জানানো হয়েছে। বিমান জানিয়েছেন, ‘বাম-কংগ্রেসের আলাদা প্রচার ও যৌথপ্রচার দু’টিই হবে। বামফ্রন্টের সভায় কংগ্রেসের প্রতিনিধি এসে বক্তব্য রাখবেন। আর কংগ্রেসের সভায় বাম প্রতিনিধি পাঠানো হবে। দ্রুত নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে।’