মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের কাতরাসু গ্রামে বাংলার ৫ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসবাদীরা। আইসিসের কায়দায় একসারিতে দাঁড় করিয়ে, ওই ৫ জনকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। যার ফলে ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। এই নৃশংস হত্যালীলার পরে জম্মু-কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক হাজার শ্রমিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক৷ কুলগামের মতো তাঁদেরও যে নিশানা করতে পারে জঙ্গীরা, এটা বুঝেই নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে উপত্যকা ছাড়তে মরিয়া হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাশ্মীরে গিয়ে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করা মানুষজন৷
কুলগামের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী সিআরপিএফ৷ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে তলব করা হয়েছে কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তে ঠিকা শ্রমিকদের কাজে লাগানো ব্যবসায়ীদের৷ কোন কোন পদক্ষেপ করলে ঠিকা শ্রমিকরা নিরাপদে থাকতে পারবেন, তা সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁদের নিয়োগকর্তাদের। এমনটাই জানিয়েছে সিআরপিএফ কাশ্মীর ডিভিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিজি, বাঙালি আইপিএস জুলফিকার হাসান৷
এই মুহূর্তে কাশ্মীরের বিভিন্ন প্রান্তে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করা কয়েক হাজার শ্রমিক রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ভিন রাজ্যের বাসিন্দা৷ এই শ্রমিকদের নিরাপদে রাখাটা যে তাঁদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ তা স্বীকার করে নিয়ে জুলফিকার হাসান জানান, ‘এখন কাশ্মীরে যে পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, তাতে সেনা বা আধা সেনার উপরে বড়সড় আঘাত হানা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই সফট টার্গেটকে বন্দুকের নলের সামনে দাঁড় করাচ্ছে জঙ্গীরা৷’ এই প্রবণতাকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এখানে বসবাসকারী শ্রমিকদের একসঙ্গে দল বেঁধে থাকতে বলেছি৷ এই ভাবে থাকলে তাঁদের জন্য আলাদা নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হবে, যেখানে সিআরপিএফ জওয়ানরা তাঁদের নিরাপত্তা দেবেন৷ তা না হলে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শ্রমিকদের জন্য আলাদা আলাদা করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়৷’ এদিকে, মঙ্গলবারের ঘটনার পরে রীতিমতো ব্যাকফুটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির পরে উপত্যকার সর্বত্র ‘শান্তি’ বিরাজ করছে, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বারবার এই প্রচার চালানোর মাঝেই এই হত্যালীলা চিন্তায় ফেলেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পদস্থ কর্তাদের৷