গতকাল সন্ধ্যায় কাশ্মীরের কুলগামের কাতরাসু গ্রাম এমনই এক নৃশংসতার সাক্ষী থাকল, যা এককথায় অবর্ণনীয়। সেইখানে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে উপত্যকার জঙ্গিরা। তবে এখনও অবধি এটা কোন জঙ্গিগোষ্ঠীর কাজ, তা জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কাশ্মীর প্রশাসন।
মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বহালনগর এলাকা থেকে জনা পনেরো শ্রমিকের একটি দল গিয়েছিল কুলগামে। মূলত আপেল বাগানে কাজ করতে যান এরা। কাতরাসু গ্রামেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন সেই ১৫ জন। সেই বাড়ি থেকে ওই শ্রমিকদের বের করে এনে হঠাৎই এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। নিহত পাঁচজনই হয় যুবক, নয় মধ্যবয়স্ক। মৃতদের নাম ৪৫ বছরের রফিক শেখ, ৩৫ বছরের কামরুদ্দিন, ৪৫ বছরের মুরসালিম শেখ, ৪২ বছরের নইমুদ্দিন শেখ এবং ২৩ বছরের রফিকুল শেখ।
এদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানা এলাকায় বোখরা-২ গ্রামপঞ্চায়েতের ব্রাহ্মণী গ্রামে। এঁরা হলেন শেখ মুরসলিম, শেখ মহম্মদ রফিক, শেখ নাইমুদ্দিন। এছাড়াও ওই একই থানা এলাকার মোড় গ্রামপঞ্চায়েতের বাহলনগরের বাসিন্দা মহম্মদ রফিকুল শেখ ও শেখ কামরুদ্দিন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত ব্যক্তির নাম জহুরুদ্দিন বলে জানা গিয়েছে। তিনিও সেই একই এলাকার বাসিন্দা। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শ্রী মুকেশ মঙ্গলবার রাতে এই খবর সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন।
কাশ্মীরের এই ঘটনায় স্তম্ভিত গোটা রাজ্য। রাতেই নিহতদের পরিবারকে শোক জানিয়ে টুইট করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, নিহতদের পরিবারকে সবরকম সাহায্য করা হবে। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরি জানিয়েছেন, বুধবার সকালেই তিনি নিহতদের পরিবারের কাছে যাবেন। ঘটনার নিন্দা করে শোকপ্রকাশ করেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।
গত ক’দিন ধরেই অ-কাশ্মীরিদের টার্গেট করছে জঙ্গিরা। মূলত টার্গেটে থাকছে অ-কাশ্মীরি ট্রাকচালকেরা। কাশ্মীর পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনে অ-কাশ্মীরিদের উপর অন্তত ৬টি হামলা হয়েছে কাশ্মীরে। যাতে মৃত্যু হয়েছে ১১জনের। এর আগে সোমবার অনন্তনাগে এক ট্রাকচালককে হত্যা করে জঙ্গিরা। তার আগে সোপিয়ানেও একই রকম ঘটনা ঘটেছে। ১৪ থেকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে এভাবেই চার অ-কাশ্মীরি ট্রাকচালককে খুন করেছে জঙ্গিরা। মনে করা হচ্ছে, এভাবেই কাশ্মীরে অশান্তি জিইয়ে রাখতে চাইছে তাঁরা।