লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল রাজনৈতিক দলবদলের। ভোটের ফল দেখে এবং গেরুয়া বাহিনীর হুমকির মুখে বহু নেতা-কর্মী-জনপ্রতিনিধিই যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু কিছুদিন গড়াতেই সকলে নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন। তাই গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করে নিজের নিজের পুরনো দলেই ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়। ভিন দল থেকে বিজেপিতে আসা বিভিন্ন স্তরের নেতা-জনপ্রতিনিধিরাই এখন গেরুয়া শিবিরের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে জানাচ্ছেন, তাঁদের যথাযথভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। দৈনন্দিন পার্টির কাজ, সংগঠনের কাজকর্ম-সহ বিভিন্ন বিষয় থেকে তাঁদের কার্যত দূরে রাখা হচ্ছে।
আর এর ফলস্বরূপ রাজ্যের একাধিক জেলায় বিজেপির দখল করা বহু স্থানীয় প্রশাসনে চিড় ধরছে। এবং লোকসভা নির্বাচনের পর যে সমস্ত পুরসভাগুলি তাদের হাতছাড়া হয়েছিল, গত কয়েকদিনে ‘ঘর ওয়াপসি’র জেরে সেসব ফের তৃণমূলের হাতে এসেছে। যেমন নৈহাটি, হালিশহর, বনগাঁর পর গত শুক্রবার গারুলিয়া পুরসভাও পুনরুদ্ধার করেছে ঘাসফুল শিবির। এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই এই প্রশ্ন উঠছে যে, এ রাজ্যে কি ক্রমশই ব্যাকফুটে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির? জবাবে বিজেপির এক রাজ্য নেতার সাফাই, তৃণমূল কিংবা অন্যান্য ডানপন্থী দলগুলির সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির ফারাক রয়েছে। তাই নতুন দলে এসে অনেকেরই মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে।
এরই মধ্যে বিজেপির অন্দরে জোর গুঞ্জন, কোচবিহারের সাংসদ তথা সদ্য তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা নিশীথ প্রামাণিককে এই মুহূর্তে কার্যত পার্টির রোজকার কাজে দেখাই যায় না। এমনকী জেলা কিংবা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গেও মধুর সম্পর্ক নয় তাঁর। এই প্রসঙ্গে, বিজেপির আরেক পদাধিকারীর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, নিশীথ প্রামাণিকের মতো কয়েকজনকে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের মারাত্মক আপত্তি ছিল। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের জন্য তাঁদের কার্যত গিলতে হয়েছে। কিন্তু ভিনদল থেকে আসা এই নেতা-জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অনেকের ভাবমূর্তিই অত্যন্ত খারাপ। তাঁর দাবি, জেনেবুঝেই তাঁদের নিত্যদিনের কর্মসূচীতে রাখা হয়।