এনআরসির জেরে আসামে এক ধাক্কায় ঘরছাড়া হয়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। এবার বাংলায় এনআরসি করার হুঙ্কার দিয়েছে বিজেপি। নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে ইতিমধ্যেই বাংলায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন।এবার এনআরসির ভয়ে ফের আত্মহত্যা করলেন এক ব্যক্তি।
দেবেন বর্মণ নামে এক প্রৌঢ় রবিবার বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাড়ি সিতাই ব্লকের কেশরীবাড়ি এলাকায়। দেবেনবাবুর ছেলে গৌরব বর্মণের দাবি, ‘‘অসমে নাগরিক পঞ্জি থেকে অনেকের নাম বাদ যাওয়ার পর থেকেই দুশ্চিন্তা শুরু করেন বাবা। বারবার আমাদের সে কথা বলতেন। সে কারণেই বাবা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে মনে হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দেবেনবাবু কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন, তার সব দিক খতিয়ে দেখা হবে। স্থানীয় সূত্রেও জানা গিয়েছে, অসমের এনআরসির পর এ রাজ্যেও এনআরসি চালু হবে বারবার বলে বারবার কথা উঠছে। সে কথা নিয়ে দেবেনবাবু চিন্তায় ছিলেন। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গ্রাম থেকে শহর সর্বত্র একটা আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
গৌরবের বক্তব্য, ‘‘আমাদের নিজস্ব কোনও জমি নেই। স্থানীয় কিছু লোকজন বাবাকে মজার ছলে বলতেন, জমি নেই তাই নাগরিক পঞ্জিতেও নাম উঠবে না। তাতেই বাবা আরও চিন্তায় পড়েছিলেন। কী করে কী হবে, বুঝতে পারছিলেন না। তারপর এদিন সকালে সে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।’’
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের সিতাই বিধানসভার আহ্বায়ক নুর আলম হোসেন বলেন, “রাজ্যের বিজেপি নেতারা যে ভাবে এনআরসি নিয়ে হুমকি দিচ্ছেন, তাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তার জেরে সারা রাজ্যে প্রায় ১২ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় কোনও দিন এনআরসি করতে দেবে না। কিন্তু মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘দেবেনবাবুর আত্মহত্যার চেষ্টার জন্য বিজেপি দায়ী।’’
দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হাসপাতালে ছুটে যান এসইউআইসি-র দিনহাটা লোকাল কমিটির সদস্য আজিজুল হক। তিনি জানান, “এনআরসি আতঙ্কে আসামের পর এ রাজ্যের মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন। এদিন সিতাইয়ের দেবেনবাবু আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে অনেকে এখনও পর্যন্ত মারাও গিয়েছেন।’’