বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ভাইফোঁটা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়ে উঠছে না। তবে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কালীপুজোয় উপস্থিত হতে পারেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। শনিবার বারাসতে দু’টি কালীপুজোর উদ্বোধন করে ধনখড় বলেন, ‘‘ভাইফোঁটার দিনটা ভাই-বোনের জন্য বিশেষ দিন।ওই দিন আমি স্ত্রীকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়ে আমাকে কালীপুজোর দিন ওঁর বাড়ির পুজোয় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। খুব খুশি হয়েছি আমরা। স্ত্রীকে নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পুজোয় যাব।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী ভাইফোঁটার দিনটি তাঁর ‘বৃহত্তর পরিবার’-কে নিয়েই উদ্যাপন করেন। ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ দিবস হিসেবেও ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পালন করেন তিনি। আর চিরাচরিত ভাবে ওই দিন তাঁর নিজস্ব কিছু কর্মসূচিও থাকে। সে কারণে ওই দিন রাজ্যপালের মতো অতিথিকে আপ্যায়ন করার যথেষ্ট অবকাশ তাঁর হবে না।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাজ্যপালের এই আগ্রহ প্রকাশ রাজনৈতিক ভাবে অর্থবহ। কারণ রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকেই একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত বেড়েছে। এখন সেই তিক্ততা কার্যত দৃষ্টিকটু জায়গায় পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল নজিরবিহীন ভাবে প্রায় নিয়মিতই প্রচারমাধ্যমের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর উষ্মা, আপত্তির কথা বলছেন। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তাঁর পদমর্যাদায় এ সব কত দূর সঙ্গত, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠছে।
অন্য দিকে, রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে তাঁকে ‘গুরুত্ব’ না দেওয়ার যে গুরুতর অভিযোগ রাজ্যপাল তুলেছেন, তাতেও বিতর্ক মাথাচাড়া দিয়েছিল। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নিজের বাড়িতে কালীপুজোয় রাজ্যপালকে আপ্যায়নের মধ্যে দিয়ে সেই বিতর্কে কিছুটা ইতি টানা যাবে বলেও মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে রাজ্যপালের এই ‘পুজো দেখতে যাওয়া’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নবান্ন এবং রাজভবনের মধ্যে সম্পর্কের ‘শীতলতা’ কিছুটা কাটিয়ে ওঠার সুযোগ দু’তরফেই থাকছে।