কথায় বলে মর্নিং শোজ দ্য ডে। কিন্তু শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে মোহনবাগানের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় নি। শেখ কামাল কাপ টুর্নামেন্টের শুরুতেই ইয়ং এলিফ্যান্টের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন ফ্রান গঞ্জালেসরা। কিন্তু পরের দু’টি ম্যাচ জিতে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল গঙ্গাপারের ক্লাব। গতকাল চট্টগ্রাম আবাহনীর বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পেল মোহনবাগান।
শুক্রবার ‘এ’ গ্রুপে তাদের শেষ খেলায় মোহনবাগান ১-০ হারাল চট্টগ্রাম আবাহনীকে। ৬০ মিনিটে মোহনবাগানের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন সুহের ভি পি। জয়ের পরে ম্যাচ সেরা মোহনবাগান মিডফিল্ডার ফ্রান গঞ্জালেসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘প্রথম ম্যাচে হারলেও আমরা আত্মবিশ্বাস হারাইনি। জানতাম নিজেদের ছন্দে খেলতে পারলে শেষ চারে জায়গা করে নেওয়া যাবে। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল।’’
কিবু ভিকুনার ছেলেরা ভালই জানতেন, এদিন জিততে না পারলে খালি হাতেই দেশে ফিরে আসতে হবে তাঁদের। ম্যাচের আগের দিন ছেলেদের ঘরে ডেকে সে কথাই বোঝান স্প্যানিশ কোচ। তাঁর পেপটকেই যে আত্মবিশ্বাসে টগবগে হয়ে উঠেছে দল, সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। গত ম্যাচে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসকে হারিয়ে এমনিতেই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন দেবজিৎরা। কিন্তু চট্টগ্রাম ম্যাচের আগে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি কেউই। কারণ তাঁরা জানতেন, এদিনই তাঁদের আসল পরীক্ষা। যে পরীক্ষায় ভালভাবেই পাশ করে গেলেন বেইতিয়ারা।
মোহনবাগান কোচ কিবু ভিকুনা এ দিন দল সাজিয়েওছিলেন বুদ্ধি করে। গোলে দেবজিৎ মজুমদারকে রেখে রক্ষণ জোরদার করে প্রতি-আক্রমণভিত্তিক খেলায় মনোনিবেশ করেছিলেন তিনি। তাই রক্ষণের দুই প্রান্তে লালরাম চুলোভা ও ধনচন্দ্র সিংহকে রেখে তিনি স্টপারে খেলিয়েছিলেন ড্যানিয়েল সাইরাস ও ফ্রান মোরান্তেকে। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে কিবু রেখেছিলেন শিল্টন ডি’সিলভা ও ফ্রান গঞ্জালেসকে। আর স্ট্রাইকার সুহেরের পিছনে তিনি রেখেছিলেন জোসেবা বেইতিয়াকে। যার ফলে রক্ষণ পোক্ত রেখে গোলের জন্য ঝাঁপাতে পারছিল মোহনবাগান
প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রামের ডিফেন্স চিড়তে পারেননি কোলিনাসরা। তবে চট্টগ্রামের আক্রমণও শক্ত হাতে রুখে দেন দেবজিৎ মজুমদার। দ্বিতীয়ার্ধে আসে সেই কাঙ্খিত গোল। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে ট্যাকেল করে দুর্দান্ত ভলিতে বল জালে জড়ান সুহের। স্কোর লাইনেই স্পষ্ট, জয় বড় ব্যবধানে হয়নি। কিন্তু এদিন বাগানের রক্ষণ যেভাবে খেলল, তাতে নিশ্চয়ই গর্বিত হবেন স্প্যানিশ কোচ। গত ম্যাচেও ডিফেন্স ভাঙতে পারেনি টিসি স্পোর্টস। এ ম্যাচেও গোল হজম করতে হয়নি দলকে। ওপার বাংলার মাটিতে যা নিঃসন্দেহে বাগানের বড় প্রাপ্তি। দু’ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টুর্নামেন্টের শেষ চারে পৌঁছে গেল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। আর সেই সঙ্গে ফের ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু বাগানভক্তদের।