শনিবার সাতসকালে একটি পূর্ণবয়স্ত হাতি দলছুট হয়ে লোকালয়ে এসে গোবর গ্যাস ভর্তি পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে গেল একটি হাতি। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির বাগরাকোটের তারঘেরা রেঞ্জে। শনিবার সাতসকালে পূর্ণবয়স্ত হাতিকে ওভাবে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি খবর দেন বনদফতরে। গভীর কুয়োয় পড়ে যাওয়ায় বেশ আঘাত পেয়েছে সাত বছরের স্ত্রী হাতিটি। তাকে ঘুমপাড়ানি ওষুধ দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টায় তৎপর বনকর্মীরা।
শুক্রবার গভীর রাতে তারঘেরা রেঞ্জের জঙ্গল থেকে প্রায় ৩০টি হাতির একটি দল চলে আসে বাগরাকোট এলাকায়। বনকর্মীদের অনুমান, রাতে বাগরাকোট চা বাগানের বাসা লাইন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল হাতির দলটি। রাতেই ওই দলের মধ্যে থেকে একটি হাতি এলাকার পরিতক্ত কুয়োয় পড়ে যায় একটি স্ত্রী হাতি। বনদপ্তর সূত্রে খবর, একসময়ে চা বাগানটি চালু থাকার সময়ে এখানে গোবর সার তৈরি হত এবং এই কুয়োটিতে তা মজুত থাকত। পরে চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জমানো গোবর সার থেকে ধীরে ধীরে গ্যাসে পরিণত হয়, কুয়োটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
শনিবার সকালে হাতিটিকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ভিড় জমাতে থাকেন। উৎসাহী মানুষজন। ঘটনাস্থলে পৌঁছান তারঘেরা, মালবাজার এবং চেল রেঞ্জের বনকর্মীরা। যায় মালবাজার থানার পুলিশও। লোকালয়ে কুয়োর মধ্যে থেকে হাতিটিকে উদ্ধার করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাঁদের। তার আঘাত গুরুতর থাকায় বাড়তি সাবধানতা নিতে হচ্ছে। ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে হাতিটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়া হাতিটিকে কুয়ো থেকে উদ্ধারের পর সে কোনওভাবে এত মানুষজন দেখে তাড়া করতে পারে, সেই আশঙ্কাও রয়েছে। তাই হাতিটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে বেহুঁশ করার পর উদ্ধারের পরিকল্পনা করছেন বনকর্মীরা।
সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে হাতির দল ঢুকে পড়া ঘিরে সমস্যা বাড়ছে। একদিকে জঙ্গল ক্রমশ কমতে থাকায় খাবারের সন্ধানে নিজেদের এলাকা ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যপ্রাণীরা খেতের পর খেত ফসল নষ্ট করছে, কখনও বা সাধারণ মানুষজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। আরেকদিকে, এদের ভয়ে জঙ্গল এলাকার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে, ঘটছে দুর্ঘটনাও।