শুক্রবার পূর্বাঞ্চল টেবল টেনিসে মেয়েদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হলেন কৃত্তিকা সিংহ রায়। ফাইনালে তিনি ৪-১ ব্যবধানে হারিয়ে দেন শীর্ষ বাছাই সুতীর্থা মুখার্জিকে। সেমি-ফাইনালে কৃত্তিকা হারিয়েছিলেন প্রাপ্তি সেনকে। আর অপর সেমি-ফাইনালে সুতীর্থা পরাজিত করেন ঐহিকা মুখার্জিকে। পুরুষদের ফাইনালে হরমিত দেশাইকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মানব ঠক্কর। সেমি- ফাইনালে মানব হারিয়েছিলেন সৌম্যদীপ রায়কে। শিলিগুড়ির সৌম্যদীপ ব্যাক্তিগত সমস্যা মিটিয়ে এই প্রতিযোগিতার সেমি- ফাইনালে পৌঁছেছিলেন। হাওড়া ডুমুরজলা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নতুন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতা তাঁর কাছে ছিল প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ।
ফাইনালে কৃত্তিকার বিরুদ্ধে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি সুতীর্থা। প্রথম দুটি গেমে কৃত্তিকা জেতেন ১১–৭, ১১–৫ ব্যবধানে। তৃতীয় গেমে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১১–৫ ব্যবধানে জেতেন সুতীর্থা। পরের দুটি গেমে ১১–৬, ১১–৮ ব্যবধানে জিতে চ্যাম্পিয়ন হন কৃত্তিকা। বোর্ডের ফেন্সিংয়ের দুই কোণে দুটো চেয়ার। সাধারণত টেবল টেনিস খেলার সময় দুই প্রতিপক্ষের দুই কোচ ওই দুই চেয়ারে বসেন। আর খেলার মধ্যে প্রতি গেমের শেষে তাঁরা তাঁদের ছাত্র বা ছাত্রীকে চেয়ার ছেড়ে উঠে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তনের নির্দেশ দেন।শুক্রবার হাওড়ার ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পূর্বাঞ্চল টিটি চ্যাম্পিয়নশিপের সিনিয়র মেয়েদের বিভাগের ফাইনালে ওই দুই চেয়ারই ছিল খালি। এই বিভাগের ফাইনালে খেললেন সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় ও কৃত্ত্বিকা সিংহরায়। এই দু’জনেরই কোচ সৌম্যদীপ রায়। তাঁর কাছে দু’জনেই সমান। তাই ম্যাচ শুরুর আগেই বাড়ি চলে যান পৌলমী ঘটকের স্বামী সৌম্যদীপ।
এদিন ম্যাচের দর্শকরা এক অদ্ভুত দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন। দেখা গেল এমবিএ পড়া সন্তোষপুরের কৃত্ত্বিকা প্রতি গেমের শেষে কোচের লাল রংয়ের ফাঁকা চেয়ারের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন। তারপর যেন মুখাভিনয় চলছে। অদৃশ্য কোচ কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন, আর ঘাম মুছতে মুছতে কৃত্ত্বিকা তা মন দিয়ে শুনে ঘাড় নাড়ছেন। এই অদৃশ্য কোচিংয়েই কৃত্ত্বিকা কিন্তু তাঁর চোকার তকমা ঘোচালেন। গত পাঁচ বছরে কৃত্ত্বিকা সিনিয়র পর্যায়ের জাতীয় আঞ্চলিক মিটে দশবার ফাইনালে উঠেছিলেন। দু’বার জাতীয় মিটেও। কিন্তু প্রতিবারই ফাইনালে হেরেছেন পেট্রোলিয়াম বোর্ডে চাকরি করা কৃত্ত্বিকা। এত দিনে তাঁর হাতে কোনও ট্রফি উঠল।
পূর্বাঞ্চল টিটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে তিনি বেজায় খুশি। জাতীয় র্যাঙ্কিংয়ে তিনি পাঁচ ধাপ উঠে এলেন। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তাঁর কাছ থেকে দর্শকরা দেখলেন পরপর পাঁচটি লাফ। কৃত্তিকা বলেন, ‘এর আগে আমি কমনওয়েলথ গেমসে ডাবলসে সোনা জিতলেও এই মুহূর্তে সেরা ফর্মে আছি। জানুয়ারিতে জাতীয় টিটিতে মেয়েদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।’