লোকসভা নির্বাচনের পরে হিড়িক উঠেছিল রাজনৈতিক দলবদলের। ভোটের ফল দেখে এবং গেরুয়া বাহিনীর হুমকির মুখে বহু নেতা-কর্মীই যোগদান করেছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু কিছুদিন গড়াতেই সকলেই নিজেদের ভুল বুঝছেন। তাই ত্যাগ করছেন গেরুয়া সঙ্গ। গত লোকসভা নির্বাচনের পর যে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূল কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছিল এবার পরপর সেগুলি পুনরুদ্ধার করছে তৃণমূল। নৈহাটি, হালিশহর, বনগাঁর পর সেই তালিকায় এবার শামিল হল এবার গারুলিয়া পুরসভার নাম। এবার পাখির চোখ ভাটপাড়া। শুক্রবার গাড়ুলিয়া দখলের পর এমনই জানালেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “‘নভেম্বর মাসে ভাটপাড়া পুরসভা শান্তিপূর্ণভাবেই দখল করবে তৃণমূল। বহু কাউন্সিলর তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। জেলা সভাপতি হিসেবে আমি আবেদন করব, যাঁদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপি–তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বা যাঁরা চলে গিয়েছিলেন তাঁরা দলে ফিরে আসুন। মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে তৃণমূলই একমাত্র দল যারা মানুষের জন্য কাজ করে।’এদিন গারুলিয়া পুরসভায় ছিল চেয়ারম্যান নির্বাচন। আর সেই ভোটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ২১ আসনের মধ্যে তৃণমূলের ১৩ জন কাউন্সিলর প্রাক্তন পুরপ্রধান বিজেপি–র বিধায়ক সুনীল সিংয়ের ভাই সঞ্জয় সিংকে পুরপ্রধান মনোনীত করেন।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের পর অর্জুন সিংহের হাত ধরে গারুলিয়া পুরসভার সিংহভাগ তৃণমূল কাউন্সিলার বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহও তৃণমূল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লেখান। ফলে গারুলিয়া পুরসভা হাতছাড়া হয়ে যায় তৃণমূলের। কিন্তু মাস কয়েকের মধ্যেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। শুরু হয় তৃণমূলত্যাগী কাউন্সিলারদের ফের দলে ফেরানোর তোড়জোড়। এরপর একের পর এক কাউন্সিলার ফের বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে শুরু করলে গারুলিয়া পুরসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় বিজেপি। সম্প্রতি অনাস্থা ভোটের আগেই পুরসভার চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন সুনীল সিংহ। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় গারুলিয়া পুরসভার বোর্ড গঠন ও প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়।