ভারতীয় রেলে যাত্রী নিরাপত্তা ও পরিষেবা যে উন্নত হওয়ার কোনও লক্ষণই নেই তা আরও একবার প্রমাণিত হল। উন্নত যাত্রী পরিষেবা ও যাত্রীদের যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়ার লক্ষ্যেই দ্রুত বেসরকারিকরণের পথে হাঁটা হচ্ছে বলে সাফাই দেওয়া হলেও সেই মতো কাজ হচ্ছে না। শিক্ষামূলক ভ্রমণ শেষে ঘরে ফেরার পথে কলকাতার যোগেশচন্দ্র আইন কলেজের ৭৭ জন ছাত্রছাত্রী বেপরোয়া আইনভঙ্গকারীদের আক্রোশের শিকারই হলেন না শুধু, রেল সুরক্ষার দায়িত্বে যে বাহিনী রয়েছে তাঁরাও সঙ্গ দিলেন আইনভঙ্গকারীদের।
১৩ অক্টোবর এই ছাত্রছাত্রীরা পুদুচেরি ও উটিতে শিক্ষামূলক ভ্রমণে গিয়েছিলেন । ফেরার সময় তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর থেকে তিরুবনন্তপুরম-শিলচর এক্সপ্রেসের এস-৬ কোচে রিজার্ভেশন ছিল তাদের। গত মঙ্গলবার তাঁরা ওই কোচে উঠতে গিয়ে দেখেন, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ এবং কোচের ভিতর বেশ কিছু অবৈধ যাত্রী আসন দখল করে বসে রয়েছে। আসন ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও ওই যাত্রীরা কর্ণপাত করেননি। পরে আরপিএফের সহযোগিতায় নিজেদের সংরক্ষিত আসনে বসতে পারেন ছাত্রছাত্রীরা।
কিন্তু সেখানেই বিপদ শেষ হয়নি। ট্রেনটি মধ্যরাতে আরাক্কোনম স্টেশনে এসে পৌঁছলে কামরার যেদিকে ছাত্রীরা শুয়েছিলেন, সেখানে ওই অবৈধ যাত্রীরা এসে জোর করে বসে পড়ে। ওই অবৈধ যাত্রীরা আইন কলেজের ছাত্রদের বেধড়ক মারধর করে ও ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। এমনকী, তারা দুই ছাত্রীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে। কর্তব্যরত এক আরপিএফ জওয়ানকেও বিষয়টি জানানো হলেও তিনি কোনও সাহায্য তো করেনইনি, উলটে আক্রমণকারীদের হয়েই সওয়াল করেন বলে অভিযোগ।
কেন এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা সাফ জানিয়েছেন, “ওই ট্রেনটি তাঁদের জোনের আওতায় নয়। ঘটনাটিও দক্ষিণ রেলের এলাকার। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই যা বলার বলতে পারবেন”।
শুধু এই নয়, আরাক্কোনাম স্টেশনে ট্রেনের জানলা লক্ষ করে ইট ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে। এর পর ট্রেনটি চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে এসে পৌঁছলে ছাত্রছাত্রীরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সেখানে। ওই আরপিএফ জওয়ানের নামও অভিযোগে জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা।