লোকসভা ভোটে দেশ জুড়ে উঠেছিল গেরুয়া ঝড়। কিন্তু মাত্র ৫ মাসের মধ্যেই বদলে গেল সেই চিত্র। আজ মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানা বিধানসভা ভোটের গণনার পরে আর উঠল না মোদী ঝড়। মহারাষ্ট্রে বিজেপি–শিবসেনা জোট পুনরায় ক্ষমতায় ফিরলেও নিজেদের ১৬টি আসন বাড়িয়ে সেই জোটকে জোরাল ধাক্কা দিয়েছে কংগ্রেস–এনসিপি জোট।এই ধাক্কাই বলে দিচ্ছে মানুষের আস্থা হারাচ্ছে বিজেপি শিবির। তাই ক্ষমতায় ফিরলেও একথা দিনের আলোর মত স্পষ্ট মানুষ আর গেরুয়া জুমলায় ভুলছেন না। মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার ভোটে বিজেপির ধস ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বাংলায় এমনই মত রাজনৈতিক মহলের।
খোদ গো-বলয়ে ধাক্কা। মাত্র পাঁচ মাস আগে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটে ব্যাপক হারে সমর্থন হ্রাস পেয়েছে বিজেপির। বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যের ভোটের ফলাফল বাংলার শাসকের পক্ষে যেমন সদর্থক, তেমনই কপালে ভাঁজ ফেলেছে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের। গত লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে ৪০ শতাংশ ভোট ও ১৮টি আসন পেয়ে ২০২১ সালের বিধানসভায় বাজিমাতের স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, মাত্র পাঁচ মাসে যদি বিজেপি শাসিত রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দলের ভোট এই হারে কমতে পারে, তাহলে বছর দুই বাদে বাংলার ভোটে তাদের পরিণতি আরও করুণ হতে পারে।
লোকসভা ভোটের ফলাফলে ভর করেই বিজেপি বাংলা জয়ের ঘুঁটি সাজাচ্ছিল। কিন্তু প্রায় দু’হাজার কিলোমিটার দূরের দুই রাজ্যের ফলাফল তাদের সেই স্বপ্নভঙ্গের ইঙ্গিত দিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কেননা, রাজ্যে মেরুকরণ বজায় থাকলেও বিজেপির সমর্থন কমলে তার লাভ পাবে তৃণমূল। ফলে, এই নির্বাচনী ফলাফল রাজ্যে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তৃণমূলকে শক্তি জোগাবে বলেই মনে করে ঘাসফুলের নেতৃত্ব। যদিও এদিন দলের পক্ষ থেকে এই ফলাফল নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি রাজ্যের শাসকদলের নেতারা। অন্য রাজ্যে দলের বিজয়ের পর এখানকার বিজেপি শিবিরে যে উল্লাস দেখা যায়, এবার তা দেখা যায়নি।
জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) জিগির তুলে বাংলায় বিভাজন উস্কে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যার মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের এনআরসি বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী। স্বাভাবিক কারণেই এনআরসি বিতর্ককে কেন্দ্র করে বাংলায় বিজেপি-তৃণমূল সম্মুখ সমরে। এহেন পরিস্থিতিতে এই ফলাফল যে মোদীকে আরও ব্যাকফুটে ঠেলল তা বলাই বাহুল্য।