মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই কেন্দ্রীয় নীতির জেরে দেশের অর্থনীতিতে গভীর মন্দা ও নীতি-পঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে। শিল্পে খরা। নগদ টাকার জোগান নেই। জিডিপি মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে মন্দার প্রভাবে কপাল মন্দ ধনতেরাসের বাজারেরও। ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতির ছায়া ঘনাল সেখানেও। আগামীকাল ধনতেরাস। কিন্তু এখনও জমেনি গয়নার বাজার। উচ্চবিত্তেরা যে সব দোকানে যান সেখানে কিছুটা বিক্রিবাটা হলেও, প্রায় মাছি তাড়ানোর অবস্থা ছোটগুলির। গয়না ব্যবসায়ীদের আশা, আজ ও কাল, এই দু’দিনে ক্রেতার ভিড় বাড়বে। যেমনটা শেষ দু’দিনে হয়ে থাকে বরাবর। তবে সিংহভাগ দোকানই নিশ্চিত, সব মিলিয়ে বিক্রি আগের বছরের থেকে কমতে পারে ৩০-৬০ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ধনতেরাস উপলক্ষ্যে সোনা কেনা শুভ— এই বিশ্বাসে ভর করে এ সময়টাতে সোনা কেনার চল মূলত দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে। তবে এখন তা ছড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যত্রও। ফলে প্রতি বছরই ধনতেরাসের ১৫ দিন আগে থেকে গয়না কেনার হিড়িক পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বিক্রি তুঙ্গে পৌঁছয় ধনতেরাসের দিন। তাই এই সময়ে ভাল ব্যবসার আশায় বুক বাঁধেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এ বছর সেই ছবি অনেক ফিকে। বেলঘরিয়ায় গয়নার দোকান, পিসি পোদ্দার জুয়েলার্সের মালিক টগর পোদ্দার যেমন বলেন, ‘আমাদের মতো ছোট দোকানে কেনাকাটা খুব কম হচ্ছে। আশা করছি, আজ কিছুটা বাড়বে। তবে ব্যবসা আগের বারের থেকে অন্তত ৬০ শতাংশ কম হবে।’
স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে’র দাবি, ‘দুর্গা পুজোর বাজার ঝিমিয়ে ছিল। চোখ ছিল ধনতেরাসের দিকে। এ ক্ষেত্রেও সবে বুধবার থেকে ক্রেতারা দোকানে আসছেন।’ আবার সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেন বলেন, ‘অন্যান্য বার কেনাকাটা শুরু হয় লক্ষ্মী পুজোর পরেই। এ বার দেরি হয়েছে। বিক্রি ২০ শতাংশের মতো কমতে পারে।’ মোদী সরকারের ওপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে এই অবস্থার জন্য মূলত দু’টি কারণকেই এখন দায়ী করেছেন গয়না ব্যবসায়ীরা। এক, সোনার দাম দ্রুত বাড়া। দুই, সাধারণ মানুষের হাতে বাড়তি টাকার অভাব।