সরকারের বিরুদ্ধে এবার অভিনব প্রতিবাদ দেখাল অস্ট্রেলিয়ার সংবাদপত্রগুলি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়া সাংবাদিকতাকে ‘অপরাধ’ তকমা দেওয়ার সরকারি অপচেষ্টার বিরুদ্ধেই মূলত প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। সোমবার দেশের বেশিরভাগ প্রথম শ্রেণির সংবাদপত্রের প্রথম পাতার সংবাদ কালো কালিতে মুছে দেওয়া হল। দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ড, দ্য অস্ট্রেলিয়ান ফিনান্সিয়াল রিভিউ, দ্য অস্ট্রেলিয়ান-সহ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র এদিন এই প্রতিবাদে অংশ নেয়। পত্রিকাগুলি প্রথম পাতার সংবাদগুলি কালো কালিতে মুছে দেওয়ার পাশাপাশি লাল কালির একটি সিল ছাপে, যাতে লেখা ‘গোপনীয়: ছাপার জন্য নয়’।
চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (এবিসি) দুই সাংবাদিক আফগানিস্তানে পশ্চিমি বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা অস্ট্রেলিয়ান বিশেষ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে সংবাদ প্রচার করে। তা ছাড়া নিউজ কর্পোরেশন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেদক এনিকা স্মেথার্স্ট তাঁর একটি প্রতিবেদনে দাবি করেন যে, সরকার জনগণের উপর নজরদারির পরিকল্পনা করছে। সেই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।মূলত এই দু’টি সংবাদকে কেন্দ্র করেই চলতি বছরের শুরুতে এবিসির অফিস এবং এনিকা স্মেথাস্টের্র বাড়িতে অভিযান চালায় অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ।
এ ঘটনায় শুরু থেকেই সমালোচনায় মুখর হয় দেশের সংবাদমাধ্যমগুলি। তারা এ ঘটনাকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর সরকার আঘাত হানছে বলেও উল্লেখ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ ওই তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর সংবাদমাধ্যমগুলি প্রতিবাদে আরও সরব হয়। তারপরেই আজকের এই অভিনব প্রতিবাদ ঘটায় তারা।
এই প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ান গণতন্ত্রে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ, তবে আইনের শাসনকেও তো সমর্থন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, সাংবাদিক অথবা যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গণতান্ত্রিক দেশ অস্ট্রেলিয়ার সংবিধানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনও অনুচ্ছেদ নেই। ফলে প্রায়ই দেশটির গণমাধ্যমকে সরকারের রোষে পড়তে হয়। যার ফলেই আজকের এই অভিনব বিক্ষোভ বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।