গ্যালারিতে ছিলেন ৬০ হাজারের উপর দর্শক। মঙ্গলবার রাত এগারোটার সময়ও বাইপাসের ধারে ভারতের নীল ও সাদা জার্সি পরে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে মোহিত সুনীল ছেত্রীরা! সবার আফশোস, এতটা আন্তরিক সমর্থন থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয় উপহার দেওয়া গেল না দেশবাসীকে।মঙ্গলবার রাতে নিউটাউনের টিম হোটেলে প্রবেশের পরই ফুটবলারদের জাতীয় শিবির থেকে ছুটি দেন কোচ ইগর স্টিম্যাচ। ফুটবলাররা যে যাঁর বাড়ি চলে যান বুধবার সকালেই। গুরপ্রীত, সুনীল বেঙ্গালুরু গেলেন। জাতীয় দলের তিন বাঙালি প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসু ও সার্থক গোলুই হোটেল থেকে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাড়িতে রওনা দেন। তার আগে ভারতীয় শিবিরে একটাই আলোচনা শোনা গিয়েছে। কলকাতার ফুটবল প্রেম। ভারতীয় দলের প্রায় সব সদস্যই একবাক্যে মেনে নিয়েছেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সবচেয়ে আদর্শ জায়গা সল্টলেক স্টেডিয়ামই।
যে ডিফেন্সের বেহাল অবস্থার জন্য বাংলাদেশ ম্যাচ জেতা হল না, সেই ডিফেন্সকে মজবুত করতে এবার নতুন মুখের সন্ধানে ভারতীয় টিমের কোচ ইগর স্টিম্যাচ।চলতি সপ্তাহের শেষ দিক থেকেই স্টিম্যাচ আইএসএলের বিভিন্ন টিমের প্র্যাক্টিসে যাওয়া শুরু করছেন। ২০ অক্টোবর শুরু আইএসএল। কিন্তু ম্যাচ দেখে ফুটবলার বাছতে চাইছেন না ক্রোট কোচ। কারণ তাঁর কথায়, ‘ম্যাচে সব টিমেই ৫-৬ করে বিদেশি খেলবে। সেখানে অনেক ভারতীয় প্রতিভাই নিয়মিত খেলার সুযোগ পাবে না। কিন্তু প্র্যাক্টিসে সেই প্রতিভাদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব।’ ঠিক কবে থেকে কোন ক্লাবের প্র্যাক্টিস থেকে তিনি কাজ শুরু করবেন তা স্টিম্যাচ অবশ্য এখনও ঠিক করেননি। বুধবার তিনি কলকাতাতেই সমস্ত জাতীয় বয়সভিত্তিক কোচের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সব টিমের কোচিং পদ্ধতি একই রকম করার নির্দেশ দেন জুনিয়রদের কোচ ফ্লয়েড পিন্টো, বিবিয়ানো ফার্নান্দেসদের। পাশাপাশি তাঁদের নতুন ফুটবলার তুলে আনার ব্যাপারেও নানা পরামর্শ দেন।
মঙ্গলবার রাতে যুবভারতীতে ৫৩ হাজার ২৮৬ জন দর্শকের সামনে বাংলাদেশের সঙ্গে ড্র করা সত্ত্বেও প্রি ওয়ার্ল্ড কাপের পরের পর্বে যাওয়ার আশা এখনও টিকে রয়েছে সুনীল ছেত্রীদের। কারণ পাঁচ টিমের গ্রুপ-‘ই’তে কাতার ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে সবার আগে। ধরেই নেওয়া যেতে পারে তারা গ্রুপের সেরা হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রুপে দ্বিতীয় হলেও সেরা চার গ্রুপের রানার্সের মধ্যে থেকে পরের রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব ভারতের। আপাতত ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পেয়ে ওমান দুইয়ে আর ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট পেয়ে আফগানিস্তান রয়েছে তিনে। ভারতের পরপর দুটো ম্যাচ আফগানিস্তান (১৪ নভেম্বর) ও ওমানের (১৯ নভেম্বর) বিরুদ্ধে। স্টিমাচের টিম এই দুটো ম্যাচে জিতলেই টেবিলের অঙ্কটা অনেক বদলে যাবে।
কাজটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। কিন্তু এই দুই অ্যাওয়ে ম্যাচের জন্য সে ভাবে প্রস্তুতি পাওয়া যাবে না বলেই চিন্তিত ভারতের কোচ। কারণ আইএসএল শুরু হয়ে যাচ্ছে। আফগানিস্তান ম্যাচের আগে স্টিমাচ ৫-৬ দিনের বেশি শিবির করার সুযোগ পাবেন না। আবার আফগানিস্তানে খেলেই গুরপ্রীতদের যেতে হবে ওমানে। কোনও প্রস্তুতির সুযোগ সেখানেও নেই। তাই তাঁর টিমের তারকা ফুটবলাররা যাতে ফিট ও সুস্থ থাকতে পারেন, সে জন্য আইএসএল টিমগুলোর দিকে তাকিয়ে স্টিমাচ। তিনি চান, তাঁর টিমের ফুটবলারদের আইএসএল টিমের কোচেরা একটু দেখেশুনে ব্যবহার করুক।