গেরুয়া শিবিরে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ফের নয়া বিতর্ক। শোভনকে নিয়ে বিজেপি-র নেতারা বিশেষ খুশি নয় বলে দলীয় সূত্রের খবর ছিল আগেই। এবার নিজের এলাকা দক্ষিণ কলকাতাতেই ‘গান্ধী সংকল্প যাত্রা’র দায়িত্ব খোয়ালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া সব্যসাচী দত্তকে।
দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপিতে কোনও বড় নেতা নেই, এমন কিন্তু নয়। চন্দ্র বসুই আছেন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ও বিজেপিতে। আর বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার পুরোটাই হাতের তালুর মতো চেনেন শোভন। তাহলে তাঁকে দায়িত্ব না দিয়ে বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়রকে যাত্রার পুরোভাগে রাখা হল কেন? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা শোভনকে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা।
গত ১৪ আগস্ট দিল্লীতে গিয়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন শোভন-বৈশাখী। তার কিছুদিন পর থেকেই দিলীপ ঘোষদের সঙ্গে তাঁদের মন কষাকষি শুরু। পরবর্তীকালে দলীয় কোনও কর্মসূচিতে সামিল হতে দেখা যায়নি শোভনকে। তাঁকে পার্টিতে সম্মান দেওয়া হচ্ছে না বলে দিল্লীতে ‘নালিশ’ পর্যন্ত করেছেন শোভন। আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে রাজ্যের সব লোকসভা কেন্দ্রে গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রা করছে বিজেপি। চলবে আগামী মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত। এই কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না শোভনকে। গোড়ায় বিজেপি ঠিক করেছিল, দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রায় আমন্ত্রণ জানানো হবে শোভন-বৈশাখীকে। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত বদল করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
তা হলে কি দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপির নেতারা এখনও শোভনকে সামনে রাখতে প্রস্তুত নন? রাজ্য বিজেপির একাংশও কি শোভনের বিষয়ে এখনও দ্বিধায়? সেই কারণেই কি ঢাল হিসেবে সব্যসাচীকে সামনে রেখে ‘গান্ধী সঙ্কল্প যাত্রা’র প্রস্তুতির দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হল জেলা কমিটির নেতাদের হাতে?
রাজ্য বিজেপির সভাপতি কোনও অস্বস্তি বা দ্বিধার কথা স্বীকার করছেন না। কিন্তু বিজেপির-ই একটি অংশের দাবি, এই মুহূর্তে দলের অন্দরের মন কষাকষি প্রকাশ্যে আসতে দিতে চাইছেন না দিলীপ ঘোষ। তাই শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে কোনও বিরূপ মন্তব্য তিনি করেননি। ঠিক একই কারণে শোভনও নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দাগার রাস্তায় হাঁটেননি বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মত। অর্থাৎ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর নতুন দলের রাজ্য নেতৃত্বের টানাপড়েনে যে এখনও পুরোপুরি ইতি পড়েনি, ‘গান্ধী সংকল্প যাত্রা’ ঘিরে সেটা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল।