যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শেষ বার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত খেলেছিল ১৯৮৫ সালের ১২ এপ্রিল। সেটাও ছিল বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ। যে ম্যাচে ২-১ জিতেছিল ভারত। আগামীকাল যুবভারতীতে ভারত বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে তাই উত্তেজিত সকলেই। দুই দলেই চলছে নিখুঁত প্রস্তুতি। লক্ষ্য একটাই পেতে হবে জয়।
গতকাল অনুশীলনের পরে বাংলাদেশের গোলকিপার কোচ ববি মিমস বলে দিলেন, ‘‘সুনীল ছেত্রীদের ভারত আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আর এটাই আমাদের বাড়তি প্রেরণা জোগাচ্ছে।’’ ১৯৯৫ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ী ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের সদস্য এই প্রাক্তন গোলকিপার আরও বলছেন, ‘‘ঘরের মাঠে দর্শকঠাসা স্টেডিয়ামে খেলবে ভারত। সুনীলদের নিয়ে ভারতীয়দের প্রচুর প্রত্যাশা রয়েছে। সেই কারণে চাপে রয়েছে ওরাই। আমরা বরং অনেক খোলা মনে খেলতে পারব ভারতের বিরুদ্ধে। সুনীলদের যাবতীয় অস্ত্র নিষ্ক্রিয় করার জন্য আমরা তৈরি রয়েছি।’’
এ দিন বাংলাদেশ অনুশীলন দেখে বোঝা গিয়েছে, ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের বল নিয়ে দৌড়নোর জন্য ফাঁকা জায়গা দিতে নারাজ জেমি ডে-র ছেলেরা। সুনীল-উদান্তদের আক্রমণ ভোঁতা করতে বাংলাদেশ রক্ষণে এই দায়িত্ব সামলানোর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন স্টপার ইয়াশিন খান। আর পিছন থেকে রক্ষণ সংগঠনের রিমোট কন্ট্রোল ছিল গোলকিপার রানার হাতে।
স্টিম্যাচরা রবিবার দুপুরে শহরে পৌছনোর পরে বিমানবন্দরে যে উন্মাদনা দেখা গেল, সাম্প্রতিক কালে কোনও ভারতীয় ফুটবল দলকে নিয়ে তা দেখা যায়নি। আট বছর পরে যুবভারতীতে খেলতে আসা সুনীল ছেত্রীদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন হাজারখানেক মানুষ। ‘ব্লু টাইগার্সদের’ অভিবাদন জানাতে জাতীয় পতাকা ও নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির ছিলেন তাঁরা। ছিল স্লোগানও। দু’দফায় আসা ফুটবলারদের দমদম বিমানবন্দর থেকে বের করে নিয়ে যেতে হয়ে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। যা দেখে অবাক কোচ বললেন, ‘‘এই ম্যাচটা জেতার জন্য কলকাতা যে ভাবে সাড়া এবং সমর্থন করছে, তাতে আমার ছেলেরা মাঠে নামার জন্য উত্তেজিত ও উদগ্রীব।’’
লক্ষ্মীপুজোর সন্ধ্যায় যুবভারতী সংলগ্ন অনুশীলনের মাঠে সুনীল ছেত্রী, উদান্ত সিংহ, শুভাশিস বসুদের দেখতেও এসেছিলেন প্রচুর সমর্থক। তাঁদের অনেকের গায়েই ছিল ভারতীয় দলের জার্সি। স্টেডিয়ামের কাউন্টারে টিকিট নেই। সব শেষ। সন্দেশ ঝিঙ্ঘান এ দিন দলের সঙ্গে অনুশীলন করলেও চোটের জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলতে পারছেন না। সন্দেশকে দলের ‘লৌহমানব’ বলেছেন স্টিভন। কী ভাবে এই ক্ষতি পোষাবে স্টিম্যাচের দল? গুরপ্রীত বলছেন, ‘‘সন্দেশের না থাকাটা ক্ষতি। আমাদের কোচ নতুন ফুটবলারদের বেশি করে সুযোগ দেন। কোচের এই ভাবনাটা কাজে লাগবে মঙ্গলবার।’’