আগামীকাল লক্ষ্মীপুজো। অফিস ফিরতি পথে বাজারটা সেরে নেবেন বলে ভেবেছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী, ব্যারাকপুরের চিত্তরঞ্জন সাঁতরা। দোকানি এক জোড়া ফুল কপির দাম চাইলেন আশি টাকা। শুনে চিত্তরঞ্জন বললেন, ‘দুটো লাগবে না একটাই দিন। যা দাম, তাতে সব কিছুই অল্প করে কিনতে হবে।’ আসলে পুজোর পরে এমনিতেই হাতে টান। তাই লক্ষ্মীর আরাধনাতেও, কাটছাঁট মধ্যবিত্ত বাঙালির। জিনিস কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েই কাল, রবিবার কোজাগরী পূর্ণিমার সন্ধ্যায় লক্ষ্মী পুজোর আয়োজনে মেতেছে বাঙালি।
গত এক বছরে জিনিষের দাম বেড়েছে দ্বিগুন। একে বাজারে মন্দা, তাতে প্রতি জিনিষের দাম আকাশছোঁয়া। শিয়ালদহ বাজারে খান দশেক গাছ কৌটো সাজিয়ে বসেছিলেন বাদুড়িয়ার বাসিন্দা সুবল সাহা। তাঁর কথায়, “একটা গাছ কৌটোর দাম চল্লিশ টাকা বললে লোকে বলছে পঁচিশ টাকা বা কুড়ি টাকা দেবে। আমরা পাইকারি বাজার থেকে কিনেছি পঁয়ত্রিশ টাকা করে”। তাই এই মন্দার বাজারে জিনিষের দাম বাড়ায়, মাথায় হাত ক্রেতা বিক্রেতা উভয় পক্ষেরই।
গত বছর যে ধানের ছড়া আড়াই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি হয়েছে, এ বার তার দাম পাঁচ টাকা করে। আর বাহারি ধানের চাদা, কোথাও চাইছে দশ টাকা, কোথাও পনেরো টাকা। নানা আকারের মিষ্টির কিলো নব্বই টাকা। লক্ষ্মীর পায়ের ছাপের রেডিমেড আল্পনার পাতা বিকোচ্ছে পনেরো টাকা থেকে কুড়ি টাকা দরে।
প্রতি রকমের চালের দাম বেড়েছে কিলোতে ৪ টাকা। তেল, ডালডা, চিনি, গুড়, ময়দা, সুজি, সাদা তেল সব কিছুর দাম পুজোর আগে কেজিতে অন্তত ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। তাই মন্দার বাজারে কোজাগরী আনন্দে এ বার অল্পতেই ধনদেবীর আরাধনা সারতে হচ্ছে বাঙালিকে। আগুন গরম ফলের বাজারও। শিয়ালদহ, এন্টালি, জানবাজারে আপেল ৬০ টাকা, ন্যাসপাতি ও শসা ৪০ টাকা, পানি ফল ৫০ টাকা প্রতি কিলো দরে বিক্রি হয়।