বিরোধীদের দিকে থেকে একের পর এক কটাক্ষ তো উড়ে আসছিলই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরেও চাপের মুখে পড়তে হচ্ছিল সরকারকে। যার ফলে শেষমেশ একপ্রকার বাধ্য হয়েই কাশ্মীরের কালা কানুন জন সুরক্ষা আইন তুলে নিতে বাধ্য হল জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন৷ উল্লেখ্য এই আইন ১৯৭১ সালে প্রথম প্রচলন করেছিলনে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শেখ আবদুল্লা৷ বর্তমানে এই আইনেই গৃহবন্দী আছেন তাঁর ছেলে তথা জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স সুপ্রিমো ও শ্রীনগরের সাংসদ ৮৩ বছরের ফারুক আবদুল্লা৷ জন সুরক্ষা আইন রদ হলেও তাঁর মুক্তি নিয়ে নীরব প্রশাসন৷ তবে জম্মু-কাশ্মীরে জন সুরক্ষা আইনের আওতায় আটক তিন নেতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হল প্রশাসন৷
২৫০টি রিট পিটিশন (হেবিয়াস কর্পাস) দ্বারা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তেই সে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর সুর নরম করল। জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের শ্রীনগর বেঞ্চকে সে রাজ্যের সিনিয়র অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল (এএজি) বি এ দার জানান, তিনটি মামলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপর থেকে জন সুরক্ষা আইনের ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় প্রয়োজনীয় নির্দেশ জেলাশাসকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি আলি মহম্মদ মাগরের বেঞ্চকে ৩০ সেপ্টেম্বর এই তথ্য জানিয়েছেন এএজি। আর এরপরই ওইদিনই আদালত রুলিং জারি করে জানিয়ে দেয়, সংশ্লিষ্ট হেবিয়াস কর্পাস রিট পিটিশনগুলির নিষ্পত্তি হয়ে গেল।
জন সুরক্ষা নিয়ে শ্রীনগর হাইকোর্টে করা তিনটি মামলাতেই পরাজিত হয়েছে সরকার পক্ষ৷ প্রথম মামলায় সরকারের তরফে আদালতে জানানো হয়, আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ১৭ আগস্ট জন সুরক্ষা আইনের ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা গত ২ সেপ্টেম্বর তুলে নেওয়া হয়। আবেদনকারী আসরার ইয়াকুব পাহলোর পরিজনরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গত ২৮ আগস্ট। দ্বিতীয় মামলায় সরকার জানিয়েছে, ৮ আগস্ট জন সুরক্ষা আইনের ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা তোলা হয়েছিল ২৯ সেপ্টেম্বর। আবেদনকারী জাহিদ ফিরদৌস মীরের পরিজনরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ২ সেপ্টেম্বর। তৃতীয় মামলায়, সরকার জানিয়েছে যে গত ২৭ আগস্ট জন সুরক্ষা আইনের ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা তোলা হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর। আবেদনকারী জাভেদ আহমেদ খানের পরিজনরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ১৯ সেপ্টেম্বর।