সমাজের সমস্তরকম বিকৃত যৌন চাহিদা নিজেদের শরীর বিক্রি করে ধারণ করেন তাঁরা। সমাজে তাঁদের নাম দিয়েছে পতিতা। পতিতালয়ের মাটি নিয়েই শুরু হয় দুর্গা মূরতি বানানোর কাজ। অথচ ওই মহিলারাই ব্রাত্য থাকেন পুজোর কাজে। এবার তাঁদের পুজোর উপহার দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন বিধায়ক। পতিতাদের জন্যে গড়ে তোলা হবে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার কদমতলায় প্রথমবার যৌনপল্লিতে দুর্গাপুজোর আয়োজন। সেই খবর পেয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক স্বপন দেবনাথ এককথায় পুজোর উদ্বোধনে সম্মতি জানিয়েছিলেন। তাঁর এই সম্মতিই যেন তথাকথিত নিষিদ্ধপল্লির আবাসিকদের আলোর জগতে প্রবেশের সুযোগ করে দিল। বৃহ্স্পতিবার সেই পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মন্ত্রী তাঁদের সসম্মানে স্বনির্ভর করে তোলার আশ্বাস দিলেন। ঘোষণা করলেন, দুর্গাপুজোর পরেই সেখানে শিবির করে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে দেওয়া হবে সেখানকার মহিলাদের নিয়ে। পাশাপাশি, ঋণ নিয়ে হস্তশিল্প থেকে বিভিন্ন কাজ শুরু করার সুযোগ মিলবে।
স্বপনবাবু বলেন, “মেয়েরা মায়ের জাত। কেউ পারিবারিক সমস্যা বা অন্য কোনও কারণে এখানে এসে পড়েছেন। এমন একটি পেশা বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু তাঁরাও তো মা। তাঁরাই মা দুর্গার আরাধনা করছেন এবার। তাই কালো দিক মুছে আলোর দিশা দেবেন মা দুর্গা। এখানকার মায়েরা চাইলে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে পারবেন। আমরা সকলে মিলে সহযোগিতা করব।”
মন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যের মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। একাধিক স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে তাঁরা রোজগারের দিশা দেখিয়েছেন। আবার এসব গোষ্ঠী তৈরির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন মহিলারা। ফলে কালনার কদমতলার যৌনপল্লির মহিলারাও স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে অন্য পেশা শুরু করতে পারেন। তাঁরাও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ পাওয়া যাবে।
স্বপন দেবনাথ এদিন সেখানকার মহিলাদের জানিয়েছেন, পুজোর পরে সরকারের তরফে এখানে শিবির করা হবে। সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চাইলে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে এখানকার মহিলাদের অন্য পেশায় যুক্ত করা হবে। তাঁরা গোষ্ঠী গড়লে মাত্র ২ শতাংশ হারে সুদে ঋণ পাবেন। বাকি ১০ শতাংশ সুদ রাজ্য সরকার দিয়ে দেবে।