শুরু হয়ে গেল পুজোর মরশুম। সঙ্গে ছুটির আমেজ। তবে এই ছুটি তো সবার জন্য নয়। রাজ্যের মন্ত্রীদের জন্য কোনো ছুটি নেই। এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু ছুটি পেয়েছেন অর্থ ও শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি ছাড়া বাকি সব মন্ত্রীকে নিজ নিজ এলাকায় থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তবে প্রথম সারির কয়েকজন মন্ত্রীর তো নিজেদের পুজোই রয়েছে। জেলার মন্ত্রীদের এলাকা চষে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকা ছাড়লে চলবে না।
এদিকে, মমতার নির্দেশে মালদহে জল জমার অবস্থা দেখতে গিয়েছেন বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের মন্ত্রী জাভেদ খান। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে একটি টিম তৈরি করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জল কমে যাওয়ার জন্য বাকি মন্ত্রীরা আর যাননি। সকলেই এখন পুজো নিয়ে ব্যস্ত। মন্ত্রীদের মতোই প্রতিটি দপ্তরের প্রধান সচিব, সিনিয়র অফিসার এবং পুলিস কর্তাদেরও পুজো ও বন্যার জন্য ছুটি বাতিল হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে পুজো যাতে নির্বিঘ্নে কাটে,
তার জন্য সতর্ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
বাম আমলে মন্ত্রীদের মধ্যে দু’-একজন ছাড়া সকলেই পুজো মণ্ডপ এড়িয়ে চলতেন। তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা পুজোয় জড়িয়ে থাকেন। এবার পুজো দখল নেওয়ার রাস্তায় নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারেনি তারা। অধিকাংশ পুজোই তৃণমূলের দখলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ চষে বেড়িয়েছেন। তাঁর মন্ত্রিসভার প্রবীণ সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছোটবেলা থেকেই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা। তাঁর একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের পুজো শহরের অন্যতম আকর্ষণীয় পুজো। সেখানে তিনি গভীর রাত পর্যন্ত থাকেন। মানুষের সঙ্গে দেখা করেন।
মমতার মন্ত্রীসভার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজোয় যুক্ত। তিনি সকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ঘুরে সন্ধ্যায় পুজো মণ্ডপে থাকেন। হাজরা পার্কের পুজোর সঙ্গে যুক্ত বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মহিলাদের একত্রিত করে বালিগঞ্জে পুজো করেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পুজোয় জড়িয়ে আছেন উত্তর কলকাতার দুই মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা ও সাধন পাণ্ডে। রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও ছোটবেলা থেকে পুজোয় যুক্ত। তাঁর চেতলা অগ্রণী ক্লাবের পুজোয় এবার পুরনো কলকাতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
মমতার পরে সবচেয়ে বেশি পুজো উদ্বোধনের আবেদন ছিল ফিরহাদ তথা ববি হাকিমের জন্য। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনিও উত্তর থেকে দক্ষিণে পুজো উদ্বোধন করে বেড়ান। মহাপঞ্চমীর দিন গঙ্গার ঘাটগুলি ঘুরে দেখেন ববি হাকিম। তিনি কলকাতার পুজোমণ্ডপ ঘুরে বেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রাতভর জেগে থাকেন অগ্রণীর পুজোমণ্ডপে। তাঁর সতীর্থ পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কলকাতার অন্যতম সেরা পুজো সংগঠক হিসেবে পরিচিত। এইরকমই কম-বেশি সব নেতা-মন্ত্রীরাই ব্যস্ত হয়ে থাকেন তাঁদের পুজো নিয়ে। পুজোর কদিন চলে তাঁদের অবিরাম ছোটাছুটি।