পুরনো বাংলার মিষ্টি নতুনের মোড়কে। হ্যাঁ, ব্যাপারটা এমনই। রসমালাই বাংলা আর বাঙালির কাছে নতুন নয়, এই পুজোয় যা নতুন তা হল, রসমালাইয়ের স্ট্রবেরি ফ্লেভার। একই কেস মাখা সন্দেশেও। এবারের নয়া প্রাপ্তি ডাবের শাঁস দিয়ে তৈরি ডাবের জলে মাখা সন্দেশ। যেমন প্রাপ্তি, সন্দেশের মধ্যে নাড়ুর নারকেল অথবা লাড্ডুর মিহিদানার পুর।
দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে মহানগরের মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যাচ্ছে, পুরোনোকে নতুন মোড়ক দেওয়ার অভিপ্রায়ে ময়রারা চেষ্টার কসুর রাখছেন না ভিয়েনের অন্দরমহলে। রসগোল্লা, সন্দেশ, চমচম, কাঁচাগোল্লা, রসমালাই, নারকেল নাড়ু, মিহিদানা— ছানা, ময়দা, রসের এই সব মিশ্রণ নিয়েই বাঙালির মিষ্টিবিলাস।
মহানগরের ঐতিহ্যশালী মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুরোনো আর সাবেক পদের আবেদন এখনও এতটাই গগনচুম্বী যে ভোল পাল্টে নতুন কিছু শো-কেসে রাখলে তা বাঙালি কতটা গ্রহণ করবে, তা নিয়ে মন খুঁতখুঁত করেই। শহরের অনেক নামজাদা মিষ্টি বিক্রেতাই সে জন্য পুরোনোকে বাঁচিয়েই তার নবরূপে উপস্থাপনায় মন দিয়েছেন। গত কয়েক বছরের মতো ফিউশন মিষ্টি এবারও মন্দ ব্যবসা দেবে না বলে আশাবাদী তাঁরা।
কেসি দাশের কর্ণধার ধীমান দাসের কথায়, ‘বাঙালির সনাতন রসগোল্লা-সন্দেশের বাজার এখনও অপ্রতিরোধ্য। তবে নবীন প্রজন্ম এখন একটু ভ্যারাইটি খোঁজে। সে জন্যই আমরা উপস্থাপনার ধরনটা বদলে দিই।’ যেমন গন্ধরাজ, ব্ল্যাক-কারেন্ট ও চকোলেট ফ্লেভারের রসগোল্লা। থাকছে ত্রিনয়নী নামের একটি রসের মিষ্টি যার সন্দেশের মতো উপরিভাগে থাকছে জাফরান, স্ট্রবেরি ও চকোলেট ফ্লেভারের তিনটি চোখ।
রিষড়ার ফেলু মোদকের কর্ণধার অমিতাভ দে জানাচ্ছেন, এবার পুজোয় তাঁদের স্পেশ্যাল চমক বেকড মালাই চমচম, কোহিনূর সন্দেশ আর স্ট্রবেরি ফ্লেভারের ক্রিমি রসমালাই। মহালয়ার পর থেকেই এ সব দেদার চাহিদা তাঁদের আউটলেটে। সন্দেশের জন্য বিখ্যাত ভীমনাগেও থাকছে অন্তত ৩০ রকমের সন্দেশ। ভবানীপুরের বলরাম মল্লিক-রাধারমণ মল্লিকেও নতুন-পুরোনোর মিশেলে তুলে ধরছে তাদের বিখ্যাত ফিউশন ব্র্যান্ডিং। বেকড রসগোল্লা, আম-দই তো থাকছেই, এবার পুজোয় সঙ্গে যোগ হচ্ছে সল্টেড ক্যারামেল সন্দেশ, চকো-চিপস কুকিটো সন্দেশ।