বর্তমান কালে এক জ্বলন্ত সমস্যা পানীয় জল। যা আজ নিঃশেষের মুখে। জ্ঞানত বা অজান্তে জল অপচয় করে আমরা নিজেরাই সভ্যতাকে বিনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছি না তো? এবার সরাসরি এই প্রশ্ন তুলেই ৮০ তম বর্ষে আহিরীটোলা সর্বজনীনের থিম ‘অজান্তে’।
অজান্তে তো আমরা কত কিছুই হারিয়ে ফেলি এবং পরে তার জন্য ভুক্তভোগী হতে হয়। এরই এক জলজ্যান্ত উদাহরণ হল ‘পানীয় জল’। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। প্রতিবছর শরতেই এ সময় মায়ের মর্ত্যে আগমন ঘটে অশুভ শক্তির নাশ করে শুভ শক্তি প্রদানের জন্য। তাই এবছর মানবজাতির অজান্তে হওয়া অসচেতনতা যাতে মায়ের আশীর্বাদে সচেতনতায় পরিবর্তিত হয়, সেই প্রয়াসই নিয়েছে আহিরীটোলা সর্বজনীন। থিম শিল্পী তন্ময় চক্রবর্তীর পরিকল্পনা ও রূপায়নে এবার এখানে মাথা তুলেছে গুজরাতের পাটনের বিখ্যাত ‘রানি কি ভাভ’।
এই ‘রানি কি ভাভ’ হল সরস্বতী নদীর তীরে অবস্থিত একটি কূপ। একাদশ শতাব্দীর তৎকালীন রানি উদয়মতীর তৎপরতায় ৭টি ধাপে নির্মিত বৃহদাকার এই নির্মাণটি জল সংরক্ষণের এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। কারণ কূপটি এইভাবেই নির্মিত, যাতে জল মাটির তলায় নেমে গেলেও মানুষ সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে জল তুলে আনতে পারে। অর্থাৎ যথেচ্ছাচারে জল অপচয় বন্ধ করে, কীভাবে জল সঞ্চয় করতে হয়, সেটাই দেখান হচ্ছে। কীভাবে সেই একাদশ শতাব্দীতে জল সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন রানি, নিজের চোখে তা প্রত্যক্ষ করতে যে এই একবিংশ শতাব্দীতে আহিরীটোলার ‘রানি কি ভাভ’-এ ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।