৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর যে সব রাজনৈতিক নেতাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের ধাপে ধাপে মুক্তি দেওয়া হবে বলে গতকালই জানিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের পরামর্শদাতা ফারুক খানকে আজ নেতাদের মুক্তির প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘হ্যাঁ, একে একে প্রত্যেকের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হবে।’’
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ আর সেই ইস্তক শুরু হওয়া কড়াকড়ির দু’মাস পূর্ণ হচ্ছে কাল। স্কুল-কলেজ-অফিস এখনও বন্ধ। গাঁধী জয়ন্তীতে কোথাও বিশেষ অনুষ্ঠানও নেই। কার্যত নেই কোনও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। এত দিন দোকানপাট-হকারে গমগম করা ঘিঞ্জি লাল চক এখন খাঁ খাঁ। হাসপাতালে রোগী কমছে। ভিন্ রাজ্য বা ভিন্ দেশের বাসিন্দা আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা এখনও দূর অস্ত। মোবাইল নেই, বাড়িতে ইন্টারনেটও নেই।
ঠিক এই কারণেই উপত্যকায় সাংবাদিকদের কাজ করাটাই এখন বিড়ম্বনা হয়ে উঠেছে। স্থানীয়, জাতীয় ও বিদেশি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকেরা আজ প্ল্যাকার্ড হাতে নীরব মিছিল করেছেন শ্রীনগরে। প্রেস ক্লাব থেকে ঘণ্টাঘরের দিকে যাওয়ার পথে সেনাবাহিনী ১৪৪ ধারার কথা বলে সেই মিছিল আটকে দেয়। প্রতিবাদী এক সাংবাদিক বললেন, ‘‘যোগাযোগের কোনও মাধ্যম না-থাকায় অন্যান্য জেলা তো দূর, শ্রীনগর শহরে কী ঘটছে, তা-ই জানতে পারছি না। পাঠক বা দর্শকেরা আমাদের দুষছেন, আমরা খবর দিতে পারছি না বলে। কিন্তু খবরটা পাব কোথায় থেকে?’’
সাংবাদিকদের অভিযোগ, খবরের সূত্র প্রকাশ করার জন্য তাঁদের চাপ দিচ্ছে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। সরকারি বাসস্থান ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁদের অনেককে। বাড়িতে বা মোবাইলে ইন্টারনেট নেই, অথচ সরকারের তৈরি করে দেওয়া মিডিয়া সেন্টারে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কোনও বালাই নেই বলে অভিযোগ করছেন সাংবাদিকেরা। কোনো খবর পাঠানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। কারণ ভিড় লেগেই রয়েছে মিডিয়া সেন্টারে। আজ মিছিলে সাংবাদিকদের মূল দাবি তাই ছিল একটাই— সংবাদমাধ্যমের অফিসে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ ফেরানো হোক। যদিও সেদিকে কর্ণপাত করছে না সরকার।