দেশের অভ্যন্তরে ক্রমাগত গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা, আক্রমণের স্লোগান হিসেবে ‘জয় শ্রীরাম’-এর ব্যবহার-সহ একাধিক ‘দুঃখজনক ঘটনা’ নিয়ে উদ্বিগ্ন দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এবার সেই বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর।
বিহারের মুজফফরপুরের সদর পুলিশ স্টেশনে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে রামচন্দ্র গুহ, আদুর গোপালকৃষ্ণন, শ্যাম বেনেগাল, আশিস চ্যাটার্জি, সৌমিত্র চ্যাটার্জি, অপর্ণা সেন, অমিত চৌধুরী, গৌতম ঘোষ, অনুরাগ কাশ্যপ, ড. পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জন দত্ত, মনি রত্নম, শুভা মুদগল–সহ দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা। বিহারের আইনজীবী সুধীর কুমার ওঝা এই বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন। এই খোলা চিঠি লিখে বুদ্ধিজীবীরা দেশের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কৃতিত্বকে খাটো করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেই আবেদনের ভিত্তিতে দু-মাস আগে মণিরত্নম, অপর্ণা সেনদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ জারি করেন চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুর্যকান্ত তিওয়ারি। সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার এফআইআর দায়ের করা হল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। যার মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা, অস্থিরতা তৈরি করা, ধর্মীয় ভাবাবাগে আঘাত, শান্তি বিঘ্ন করার চেষ্টা প্রভৃতি।
উল্লেখ্য, ২৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো ওই চিঠিতে নিজেদের ‘শান্তিপ্রিয় ও গর্বিত ভারতবাসী’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে অপর্ণা সেনরা লিখেছিলেন, ‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী… মুসলিম, দলিত ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা এই মুহূর্তে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এনসিআরবি (ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো)–র রিপোর্ট থেকে আমরা জানতে পেরেছি ২০১৬ সালে ৮৪০ জন দলিতের ওপর আক্রমণ নেমে এসেছে। এবং একই সঙ্গে হ্রাস পেয়েছে শাস্তির অনুপাত। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবরের মধ্যে ধর্মকে কেন্দ্র করে ঘৃণার জন্যই আক্রমণের ২৫৪টি ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহতের সংখ্যা ৫৭৯।’