এ যেন ভূতের মুখে রামনাম! মোহনদাস করমচন্দ গান্ধীর মূল্যবোধই অনুসরণ করে এগোচ্ছে আরএসএস। আর সঙ্ঘের শাখায় গিয়েও বেজায় খুশি হয়েছিলেন গান্ধীজি। এমনই দাবি করেছেন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত। তবে গান্ধী সম্পর্কে আরএসএসের এই নতুন অবস্থান প্রচারকে তুলোধোনা করতে ছাড়েননি সোনিয়া গান্ধী থেকে শুরু করে বিরোধী শিবিরের অন্য নেতারা।
গান্ধীর ১৫০তম জন্মদিনের আগে ভাগবত একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ‘গান্ধী গ্রেফতার হওয়ার পর ১৯২২ সালে নাগপুরে কংগ্রেস একটি সভার আয়োজন করেন। (সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম) হেডগেওয়ার সেই সভায় বলেছিলেন, গান্ধীর মূল্যবোধ আমাদের জীবনে অনুসরণ করাই একমাত্র পথ।’ ভাগবত আরও বলেন, ‘১৯৩৬ সালে ওয়ার্ধার কাছে সঙ্ঘের একটি শিবিরে এসেছিলেন গান্ধী। দিল্লীর কাছে একটি শাখাতেও গিয়েছেন তিনি। স্বয়ংসেবকদের শৃঙ্খলা ও জাতপাত নিয়ে বিভাজনের ভাবনা না-দেখে তিনি খুশি হয়েছিলেন।’
বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, বিজেপি-আরএসএস শুধু নিজেদের গান্ধীর উত্তরসূরি হিসেবে মেলে ধরতেই চাইছে না, আরএসএস তাদের বিরুদ্ধে গান্ধীহত্যার কালিমাও ঘোচাতে চাইছে। সে কারণেই ভাগবত বোঝাচ্ছেন, আরএসএসকে সমর্থন করেছেন গান্ধী। গান্ধীরই পথে চলছেন তাঁরা। এই নিয়েই সোনিয়া বলেন, ‘ভারত ও গান্ধী পরিপূরক, যদিও আজকাল কিছু লোক এটিকে উল্টে দেওয়ার জেদ ধরে আছেন। তাঁরা চান, গান্ধীজি নন, ভারতের প্রতীক হোক সঙ্ঘ। তাঁদের আমি সাফ বলতে চাই, আমাদের দেশে গান্ধীজির দেখানো সংস্কৃতি, সভ্যতা, সমাজ কখনও তাঁদের ভাবনা হতে পারে না।’
আবার, কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহেরও বক্তব্য, ‘যে আদর্শ গান্ধীকে হত্যা করেছে, তার বাহকরাও আজ পদযাত্রা করছে! আমার প্রশ্ন, তারা গান্ধীর পক্ষে না গডসের?’ মল্লিকার্জুন খাড়গেও বলেন, ‘এত দিন যাঁরা শুধু গডসের নাম নিতেন, ভোট পেতে তাঁরা গান্ধীর নাম নেওয়া শুরু করেছেন।’ এমনকি বন্দি অবস্থায় মেহবুবা মুফতিও টুইট করে বলেন, ‘গান্ধীর ১৫০তম জন্মদিনে আমাদের প্রশ্ন করা উচিত, তাঁর মানবতা, সত্য, অহিংসার প্রতি কি সুবিচার হচ্ছে? মুসলিম ও সংখ্যালঘুদের যেখানে উইপোকার মতো দেখা হয়, সেটি কি গান্ধীজির ভারত না গডসের?’