আসামে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। আতঙ্ক বাড়ছে এই রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও। এরই সঙ্গে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে বিজেপি নেতাদের ক্রমাগত হুঁশিয়ারি যে বাংলাতেও এনআরসি করা হবে। যথাযথ নথি না থাকলে নাগরিকত্ব হারানোর ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এবার ফের এই আতঙ্কে প্রাণ হারালেন আরও এক জন। এনআরসির আতঙ্কে বাদুড়িয়ায় প্রাণ হারালেন এক প্রৌঢ়।
মৃত ওই ব্যক্তির নাম আলাউদ্দিন তরফদার (৫১)। বাড়ি বাদুড়িয়ার উত্তর যদুরআটি পঞ্চায়েতের পিঙ্গলেশ্বর কুলবেড়িয়া গ্রামে। এই নিয়ে বসিরহাটে ৫ জনের মৃত্যু হল এনআরসি–আতঙ্কে। এর আগে জমিজমার পুরনো দলিল জোগাড় করতে গিয়ে দৌড়ঝাঁপে অসুস্থ হয়ে সেপ্টেম্বর মাসেই হিঙ্গলগঞ্জের কাটাখালি গ্রামের আমেনা বেওয়া, তসলিমা বিবি, বসিরহাটের কৃপালপুর গ্রামে মন্টু মণ্ডলের মৃত্যু হয় হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে। জমির সংক্রান্ত কাগজ জোগাড় করতে না পেরে এবং ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ডের ভুল সংশোধন করতে গিয়ে হয়রানিতে হতাশ হয়ে আত্মঘাতী হন বসিরহাটের সোলাদানা গ্রামের কামাল হোসেন।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন আলাউদ্দিন। একটু সুস্থ হয়ে মাছের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। নতুন বাড়িও করছিলেন সম্প্রতি। বাড়ি করতে গিয়ে ধারদেনা হয়ে যায় তঁার। তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা নুর হোসেন বলেন, ‘একে অসুস্থ, তার ওপর বাড়ি করতে গিয়ে ঋণ হয়ে গিয়েছিল আলাউদ্দিনের। সেইসঙ্গে কিছুদিন এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তা পড়ে গিয়েছিলেন।’ যদুরআটি উত্তর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জাহিদুল হক বৈদ্য বলেন, ‘অসুস্থ শরীরে জমিজমার কাগজপত্র কীভাবে জোগাড় করবেন তার কূলকিনারা করতে পারছিলেন না। একটু চাপা স্বভাবের মানুষ আলাউদ্দিনের রক্তচাপ বেড়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তঁার মৃত্যু হয়।’ মৃতের বাবা ছাত্তার তরফদার বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে শরীর ও মন ভেঙে গিয়েছিল। কিছুদিন হল বেশি দুশ্চিন্তা করত। এদিন সকালে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’