বর্তমানে রেপো রেট নিম্নমুখী হওয়ায় ঋণে কম সুদের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে ঠিকই। তবে, রেপো রেট ৫ শতাংশের নিচে নামার সম্ভাবনা কম। এখন গ্রাহকরা ঋণ নেওয়ার মাসিক কিস্তি কত হবে তা আগাম হিসাব করতে পারেন। কিন্তু, নতুন নিয়মে তা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। হঠাৎ করে মাসিক কিস্তি বাবদ খরচের পরিমাণ বেড়ে গেলে গ্রাহকরা বিপাকে পড়বেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার রেপো রেট নির্ভর করার নির্দেশের পর এমনটাই জানিয়েছিলেন ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও অশোক কুমার প্রধান। এবার জানা গেল, ফের রেপো রেট কমাতে পারে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। এই সপ্তাহের শেষেই ফের আর্থিক নীতি ঘোষণা করবে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তখনই ২৫ বেসিস পয়েন্ট বা .২৫ শতাংশ রেপো রেট কমানোর ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। আর সেটা হলে এক বছরে টানা পাঁচ বার রেপো রেট কমানোর নজির তৈরি হবে। আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সর্বোপরি শিল্পে গতি আনতে আরবিআই এই পদক্ষেপ করতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
প্রসঙ্গত, কর্পোরেট করে ব্যাপক ছাড়ের ঘোষণার পরেও আর্থিক বৃদ্ধি আশানুরূপ নয়। মুদ্রাস্ফীতিতেও লাগাম পরানো যায়নি। গত মাসে কর্পোরেট কর কমানোর পরে শিল্পমহলে উৎসাহ বাড়লেও তার প্রভাবে শিল্পক্ষেত্র চাঙ্গা হতে আরও সময় লাগবে। এই পরিস্থিতিতে রেপো রেট না কমালে এমনকি, অপরিবর্তিত রাখলেও শিল্পমহলের আস্থা ফেরানো মুশকিল হবে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এই সব কারণেই ফের এমন সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে আরবিআই। উল্লেখ্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদের হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ঋণ দেয়, সেটাই রেপো রেট। রেপো রেট কমানোর অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির ঋণদানের ক্ষমতা বাড়বে। ফলে সাধারণ মানুষের হাতে নগদের জোগান বাড়ে এবং ক্রয়ক্ষমতা বাড়ে। এই রেপো রেট সাধারণত ২৫ বেসিস পয়েন্টই কমায় আরবিআই। কিন্তু আগস্টেই কার্যত সেই রীতি ভেঙে এক ধাক্কায় ৩৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে দেয় রেপো রেট। বর্তমানে এই রেপো রেট ৫.৪০। আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমালে সেটা দাঁড়াবে ৫.১৫ শতাংশে। কিন্তু তার পরেও আশানুরূপ বৃদ্ধি হয়নি বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। সেই কারণেই ফের রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত হতে পারে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।