এ যেন কেঁচো খুঁড়তে কেউটে! চেয়েছিলেন এক, হল আরেক।
যার ফলে নিজের মুখ তো পুড়লই। পোড়ালেন দলের মুখও! কথা হচ্ছে, দিল্লীর এক বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে। মাস কয়েক আগের ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কতটা জনপ্রিয়? এ নিয়ে টুইটারে ভোট করিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভোটের ফল দেখে চক্ষু চড়কগাছ তাঁর নিজেরই। কারণ ৭০ শতাংশই কেজরিওয়ালের জনপ্রিয়তার তারিফ করেছেন। বাকি ৩০ শতাংশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
যদিও অবস্থা সামাল দিতে ওই বিধায়ক মহোদয় এই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, নেট-ভোটে কেজরীবালকে জিতিয়ে দেওয়ার পিছনে আম আদমি পার্টির (আপ) তথ্য-প্রযুক্তি সেলের ‘হাত’ আছে। তবে বিজেপির মধ্যেই প্রশ্ন ওঠে, গেরুয়া শিবিরের ফৌজ কী করছিল?
উল্লেখ্য, দিল্লী নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের চিন্তা শুধু ওই ছোট বিক্ষিপ্ত ঘটনায় নয়। ২০১৪ সালে প্রবল দাপটে লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী জিতে এসেছিলেন ঠিকই। কিন্তু পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে দিল্লীর ভোটে আপ কার্যত মুছে দেয় বিজেপিকে। ৭০টির মধ্যে দখল করে ৬৭টি আসন। বিজেপি এবং আরএসএস নেতৃত্বের আশঙ্কা, এ বারেও না তার পুনরাবৃত্তি ঘটে! বিজেপি সূত্রের মতে, দলের সভাপতি অমিত শাহ তো বটেই, আরএসএস নেতৃত্বও চিন্তায় রয়েছেন দিল্লীর ভোট নিয়ে।
কারণ, অতীতে কথায় কথায় ধর্না বা উপরাজ্যপালের সঙ্গে বিবাদে জড়ালেও, সেই কৌশল থেকে একেবারে সরে এসে এখন তৃণমূল স্তরে কাজ করছেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী। যেমন দিল্লীর স্কুলের মান বাড়িয়েছেন তিনি, তেমনি মহল্লা-ক্লিনিকে কম খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। সস্তা করেছেন বিদ্যুতের দামও।
অন্যদিকে, ৩ বছর আগে দিল্লিতে পূর্বাঞ্চলের ভোট কাড়তে ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে গায়ক-অভিনেতা মনোজ তিওয়ারিকে দলের রাজ্য বিজেপির সভাপতি করা হলেএ আরএসএসের ক্ষোভ, সংগঠনের রাশ ধরতে পারেননি তিনি। কেজরীবালের বিকল্প মুখও হয়ে উঠতে পারেননি। দলে নেতায়-নেতায় কোন্দল বরং বেড়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘দ্বিতীয় দফায় লোকসভায় তিনশো পার করে মোদী-শাহ জুটির এখন লক্ষ্য হল সব রাজ্যে বিধানসভা জয়। হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র কিছুটা স্বস্তিতে রাখলেও দিল্লী নিয়ে উদ্বেগ প্রবল। খাস রাজধানীতে মোদী-শাহের নাকের ডগায় হার বিজেপির পক্ষে আদৌ সুখকর নয়।’