বিজেপি নেতা চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে যে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকেই বন্দি করেছে পুলিশ। অভিযোগকারিণীর মুক্তির দাবিতে সোমবার উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের মিছিল করার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসন তাঁদের অনুমতি দেয়নি। সেইসঙ্গে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জিতিনপ্রসাদকে গৃহবন্দি করেছে। আরও তিন কংগ্রেস নেতাকে আটক করেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, এটাই যোগীরাজের শাসন। বিজেপি জমানায় নীরব থাকতে হবে বিরোধীদের। কোনওরকম মিটিং-মিছিলেরও অনুমতি মিলবে না তাদের।
সোমবার সকালে প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারিণী আইনের ছাত্রীর সমর্থনে উত্তর প্রদেশের শাহজাহানপুরে জিতিন প্রসাদে নেতৃত্বে ‘ন্যায় যাত্রা’ শীর্ষক পদযাত্রার আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গের কথা বলে তার অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিস। বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ায় জিতিনকেও সুরক্ষিত হেপাজতে নিয়েছে পুলিস। যোগী সরকার বিরোধীদের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে চাইছে বলে জিতিন টুইট পোস্টে পরে অভিযোগ করে লিখেছেন, ‘উত্তর প্রদেশ তো কাশ্মীর নয়। তা সত্ত্বেও আমাকে সুরক্ষিত হেপাজতে রাখা হয়েছে কারণ আমি শুধু শাহজাহানপুরের ধর্ষিতার সমস্যাকে প্রচারে আনতে চেয়েছিলাম। বিজেপি সরকারের কোনও অধিকার নেই কোনও ব্যক্তির মৌলিক অধিকার নষ্ট করার।’
জিতিন তাঁর টুইট পোস্টের বয়ান চিঠিতে লিখে শাহজাহানপুর জেলাশাসকের দপ্তরেও পাঠিয়েছেন। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ প্রথমে মিটিং-এর পর সদর বাজার, বাহাদুরগঞ্জ হয়ে লখনউ পর্যন্ত পদযাত্রার আয়োজন করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু জেলাশাসকের তরফে চিঠিতে কংগ্রেসকে জানিয়ে দেওয়া হয়, নবরাত্রি চলায় শহরে উৎসবের আমেজ রয়েছে। তাছাড়া সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনে যে রাস্তা দিয়ে পদযাত্রা ঠিক করা হয়েছিল, সেটা ব্যস্ত এলাকা। তাই সেখানে সকালে অতটা পুলিসি নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। এতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। সেজন্যই পদযাত্রায় বাধা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২৩ বছরের ওই আইনের ছাত্রী অভিযোগ করেছিলেন নিজের ক্ষমতা দেখিয়ে তাঁকে প্রথমে ধর্ষণ করেছিল চিন্ময়ানন্দ। তারপর তাঁকে টানা একবছর ব্ল্যাকমেইল করত। দিল্লিতে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। এরপর আদালতে চিন্ময়ানন্দের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোর করে সঙ্গমের অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু তারপর থেকেই চিন্ময়ানন্দ হাসপাতালে ভর্তি। এদিকে, নির্যাতিতার বিরুদ্ধে চিন্ময়ানন্দ ঘনিষ্ঠরা ভয় দেখিয়ে পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দায়ের করেছিল। তারপরই গত সপ্তাহে উত্তর প্রদেশ পুলিস বাড়ি থেকে রাতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। গত চার দিন ধরে অভিযোগকারিণী ছাত্রী জেলে বন্দী।