আসামে নাগরিকপঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। আতঙ্ক বাড়ছে এই রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেও। এরই সঙ্গে অনুঘটকের মতো কাজ করেছে বিজেপি নেতাদের ক্রমাগত হুঁশিয়ারি যে বাংলাতেও এনআরসি করা হবে। যথাযথ নথি না থাকলে নাগরিকত্ব হারানোর ভয় পাচ্ছেন অনেকে। এবার ফের এই আতঙ্কে প্রাণ হারালেন আরও এক জন। এনআরসি আতঙ্কে জামালপুর থানার জৌগ্রামের ট্যাংয়াবেরিয়া গ্রামে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল কমল ঘোষ (৫৫) নামে এক ব্যক্তির।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা মেহমুদ খান বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে বিজেপি–র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে আতঙ্কিত জামালপুরের মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, এ রাজ্যে এনআরসি চালু করতে দেওয়া হবে না। তাঁর নির্দেশ মতো মানুষকে বোঝাতে মিছিল–মিটিং–সভা করছি যাতে তাঁরা এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে না ভোগেন।’
মৃতের ভাগনে তারক দাস জানিয়েছেন, এনআরসি নিয়ে অসমের ঘটনায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন তাঁর মামা কমল ঘোষ। তাঁদের পৈত্রিক বাড়ি ছিল মেদিনীপুরে। পরে ট্যাংয়াবেরিয়া গ্রামে এসে জমির মালিকের বাড়ি কাজ করতে করতে এখানেই বসবাস শুরু করেন। আগেকার ঠিকানার নথিপত্র হাতে না থাকায় তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তিনি বলতেন, ‘আমাদের কোনও প্রমাণপত্র নেই। অসমের মতো আমাদেরও বাইরে নিয়ে চলে যাবে। কী হবে ? বাড়িঘর রেখে কী করে যাব?’ এসব নিয়েই বিড়বিড় করতেন। শুক্রবার সকালে বাজার করে বাড়ি ফিরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুকে ব্যথা বলতে বলতেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।
রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বাঁকুড়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত বাঁকুড়ায় মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। এনআরসি আতঙ্কে বর্ধমানেও প্রাণ হারিয়েছেন আরেকজন। দুই পরিবারেরই অভিযোগ, নাগরিকপঞ্জি তৈরির যথাযথ নথি পেশ করতে না পারার আতঙ্কেই প্রাণ কেড়েছে তাঁদের।