রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এবার হৃদরোগে আক্রান্ত বাঁকুড়ায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। এনআরসি আতঙ্কে বর্ধমানেও প্রাণ হারিয়েছেন আরেকজন। দুই পরিবারেরই অভিযোগ, নাগরিকপঞ্জি তৈরির যথাযথ নথি পেশ করতে না পারার আতঙ্কেই প্রাণ কেড়েছে তাঁদের।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে সিমলাপাল ব্লকের পাথরডোবা গ্রামটি মুসলিম অধ্যুষিত। সেখানেই দিন কয়েক ধরে আজাদ আলি খান ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, জমির কাগজপত্র, রেশন কার্ড নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন সরকারি শিবিরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, অন্যান্য দিনের মতো শুক্রবার সকালে গ্রামের একটি চায়ের দোকানে এনআরসি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করতে করতে একাধিক ব্যক্তির স্মার্ট ফোনে এনআরসি সংক্রান্ত নানান ভিডিও দেখেন। দুশ্চিন্তায় পড়ে বাড়ি যান।
বাড়ি ফিরে ফের তিনি নিজের জমি, বাড়ি সংক্রান্ত নথিপত্র এবং পরিবারের সকলের আধার কার্ড, রেশন কার্ড, ভোটার কার্ডগুলি নিয়ে দেখতে বসেই তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়। সঙ্গে সঙ্গেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আজাদ আলি খান।
পূর্ব বর্ধমানের টেঙ্গাবেড়িয়ার গোয়ালাপাড়ায় একই কারণে মৃত্যু হয়েছে কমল ঘোষ নামে এক দিনমজুরের। শুক্রবার ডিজিট্যাল রেশন কার্ড করানোর জন্য বিডিও অফিসে যাচ্ছিলেন কমলবাবু। রাস্তায় অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধারকরে তাঁকে বাড়িতে দিয়ে যায়। এরপর চিকিৎসক ডাকা হয়। তিনি দেখে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের দাদা ইতলবাবু বলেন, “এনআরসি চালু করে রাজ্যের ২ কোটি মানুষকে দেশছাড়া করার হুমকি শোনার পর থেকেই ভাই দুশ্চিন্তায় পড়েছিল। আবার কেউ তাকে বুঝিয়েছিল ১৯৭১ সালের দলিল জোগাড় করতে হবে। তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। কয়েকদিন ধরে ভাই বসতভিটের নথি খুঁজছিল।”