বাঙালি ৮০ বছর ধরে যার চণ্ডীপাঠ শুনে শিহরিত হচ্ছে প্রতি মহালয়া, সেই বীরেন ভদ্র একজন অব্রাহ্মণ।
বাংলাভাষায় কুরান শরীফের অনুবাদ করেছিলেন যিনি তিনি গিরীশচন্দ্র সেন। একজন হিন্দু।
বীরেন ভদ্র গঙ্গাস্নান করে শুদ্ধ বসনে আকাশবাণী স্টুডিও তে যখন ঢুকতেন, ওনার হেডফোন ও মাইক ঠিক করে দিতেন এক ইসলাম ধর্মাবলম্বী কৌশলী।
সর্বকালের সেরা শ্যামা সঙ্গীত যারা লিখেছে তাদের অন্যতম কাজি নজরুল ইসলাম।
বাংলার সবচেয়ে বড় পুজো আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম একজন মুসলমান – নাম ফিরহাদ হাকিম।
যেরকম দুর্গা পুজোর থিম সং জনপ্রিয় করলেন যিনি তিনি উস্তাদ রশিদ খান। বাড়িতে নিষ্ঠাভরে সরস্বতী পুজো করেন।
দেবীর আরাধনা হয় যেখানে, রীতিমত সন্ধ্যারতি হয় যে মন্ডপে বিপুল রোশনাই এ, সে জায়গার নাম মহম্মদ আলি পার্ক।
আকাশবানী কলকাতায় মহিষাসুরমর্দিনী চণ্ডীপাঠের আগে কিন্তু বাজে অহিন্দু বিসমিল্লাহ খাঁ এর সানাই এ মঙ্গল ধ্বনি।
এদের বাদ দিয়ে, আরসালানের বিরিয়ানি বাদ দিয়ে, বাবুঘাটে তর্পণ সেরে, খিদিরপুরের ধুমায়িত নল্লি নিহারি আর পরোটা বাদ দিয়ে, নবমীর চিংড়ি মাছের মালাইকারি বাদ দিয়ে কিসের দুর্গা পুজো!
আমার ধর্ম আমায় নিজের মতো উদযাপনের স্বাধীনতা দিয়েছে, আমার শহর আমায় বাকিদের সাথে মিলেমিশে থাকতে শিখিয়েছে, আমার সংস্কৃতি আমায় একাধারে আলী আকবর খাঁ আর রবিশঙ্করকে আত্মস্থ করতে শিখিয়েছে।
হুজুগে পরে বা ছায়া পেতে মহিষাসুরের দিকে আশ্রয় নিলে, ফিরে আসুন এই দেবীপক্ষে। মাথায় রাখবেন শেষমেশ সত্যেরই জয় হয় আর অধর্মের হয় বিনাশ। যদি দেখেন মহিশাসুর জিতে যাচ্ছে, দম রাখুন, পিকচার আভি বাকি হ্যা।
অন্ধকার সময়। আসুন বেঁধে বেঁধে থাকি।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত