নিজের পকেটের টাকা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে এনে বাবা রাঘবদাস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বহু শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে সকলের চোখের মণি হয়ে উঠেছিলেন তিনি। রোগীদের পরিজন থেকে জাতীয় সংবাদমাধ্যম- তাঁর ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন সকলেই। কিন্তু অক্সিজেনের অভাবে একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনায় ‘দোষীদের কঠোরতম সাজার’ আশ্বাস দেওয়ার অল্প পরেই রাতারাতি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কাফিল খানকে। পাশাপাশি, যোগী সরকারের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, কাজে ফাঁকি, প্রাইভেট প্র্যাকটিস এবং চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগও আনা হয়েছিল।
এই শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উত্তরপ্রদেশ সহ গোটা দেশেই বিক্ষোভ দানা বাঁধে। চিকিৎসককে বরখাস্ত করার সময় উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছিল যে অক্সিজেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার পরেও কাফিল খান তাৎক্ষণিক ভাবে পদক্ষেপ নিতে বা হাসপাতালের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অক্সিজেন সংক্রান্ত আসন্ন সঙ্কট সম্পর্কে সতর্ক করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয়েছিল বিচার বিভাগীয় তদন্ত। ২ বছর পর সেই তদন্তের রিপোর্টেই জানানো হয়েছে, ড. কাফিল খান নির্দোষ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলির কোনওরকম সত্যতা যাচাই করা যায়নি, এমনটাই বলা আছে আইএএস অফিসার হিমাংশু কুমারের নেতৃত্বাধীন তদন্তের ১৫ পাতার রিপোর্টে।
আর তারপরেই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন কাফিল খান। এদিন তিনি বলেন, ‘আমি জানি, আমি কোনও ভুল করিনি। সেই সময় একজন চিকিৎসক হিসাবে আমার যা যা করণীয় থাকতে পারে তাই করেছিলাম। কিন্তু তারপরেও শিশুমৃত্যুর অভিযোগে আমাকে জেলে পাঠানো হয়েছে। আমার পরিবারকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আসলে যোগী সরকার নিজেদের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলার জন্যই আমায় বলির পাঁঠা বানিয়েছিল। এখন একটাই প্রার্থনা করছি, যাঁরা দোষী, তাঁদের সাজা হোক। তাহলেই শান্তি পাব।’ ৮ মাস জেল খাটেন তিনি। ৮ মাস পর এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁকে জামিনে মুক্তি দেয়। অবশেষে আজ তিনি নির্দোষ প্রমাণ হলেন।