মোদী সরকারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর দিনই কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে এবার রেলের বেসরকারিকরণ করতে চলেছে মোদী সরকার। তারপরই সমস্ত জল্পনাকে সত্যি করে বাজেট পেশের দিনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, রেল নিয়ে বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই তা বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে আইআরসিটিসিকে পরীক্ষামূলকভাবে তেজস এক্সপ্রেসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হলে পরবর্তীতে আরও ১৫০টি ট্রেন তুলে দেওয়া হবে পুরোপুরি বেসরকারি হাতে। যার মধ্যে রয়েছে হাওড়া-পুরী, হাওড়া-দিল্লী, হাওড়া-মুম্বইয়ের মতো দূরপাল্লার রুটের পাশাপাশি মুম্বই, কলকাতার কয়েকটি লোকাল ট্রেনও।
তৃণমূলের তরফে সাংসদ সৌগত রায় রেলের এই প্রয়াসকে জনবিরোধী ও শ্রমিকবিরোধী বলে তোপ দেগেছেন। তাঁর মতে, রেল হচ্ছে দেশের প্রাচীনতম সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। ১৪ লাখেরও বেশি কর্মী কাজ করেন। তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তাই রেলকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়া শ্রমিকবিরোধীও। সৌগতর মতোই বেসরকারিকরণের ঘোর বিরোধী শিয়ালদা আ হাওড়া ডিভিশনের যাত্রীদের একটি বড় অংশ। কারণ বেসরকারি পরিষেবার ক্ষেত্রে ভাড়া ঠিক করবেন খোদ সংস্থাই। ফলে সরকারের ভর্তুকি না মিললে ভাড়া যে বাড়বেই তা স্পষ্ট। আবার রেল কোনও বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে পুরনো কর্মীদের চাকরিও যে প্রশ্নের মুখে পড়বে, সে কথাও বলাই বাহুল্য।
বিষয়টি জানাজানি হতেই সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একজন যাত্রী যেমন বলেন, ‘এর ফলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ রেলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে তা বেসরকারি হাতে চলে গেলে ভাড়া বেড়ে যাবে অনেক গুণ। কারণ লাভই হয়ে উঠবে তখন রেলের একমাত্র লক্ষ্য।’ আরেক যাত্রী আবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘মোদী সরকার তো গোটা দেশটাকেই আম্বানী-আদানিদের হাতে তুলে দিতে চাইছে। রেলকেও দেবে। এতে আর অবাক হওয়ার কী আছে! তাঁর আশঙ্কা, বিএসএসএলের মতো রেলেও লক্ষ লক্ষ কর্মী বিপাকে পড়বেন।