শুরুটা করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। দিনকয়েক আগেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ বলেছিলেন, ‘সহজপাঠ’ লিখেছিলেন বিদ্যাসাগর। আর তা নিয়ে হাসির রেশ কাটার আগেই বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকীর দিন বোমা ফাটালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘খোলা হাওয়া’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সতীদাহ প্রথার বিলোপ, বিধবা বিবাহ চালু করেছিলেন বিদ্যাসাগর। তাঁর জন্মদিনে একটা সংগঠন শুরু হচ্ছে, এটা অনেক বড় ব্যাপার।’
স্বাভাবিকভাবেই বাবুলের এ হেন রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ঘেঁটে ঘ করে ফেলায় সমালোচনা শুরু হয় চারিদিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলতে থাকে মস্করা ও ট্রোলের বন্যা। শেষমেশ বাবুল একপ্রকার বাধ্য হয়ে নিজের ভুল তো স্বীকার করে নেন, কিন্তু সেইসঙ্গে এমন একটা কথা লেখেন যা দ্বিগুণ হাস্যরসের জন্ম দেয়। আসানসোলের সাংসদ বলেন, রামমোহন রায় নাকি তাঁকে এসএমএস করে ক্ষমাও করে দিয়েছেন! একজন এত বড় মাপের সমাজ সংস্কারককে নিয়ে এ হেন রসিকতায় উঠেছে বিতর্কের ঝড়ও।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে বাবুল লিখেছেন, ‘রামমোহন রায় অলরেডি আমাকে মাফ করে দিয়ে হাসিমুখে এসএমএস করেছেন। আশীর্বাদও করেছেন।’ এখানেই থেমে না থেকে বিষয়টি মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়া বলে উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আপনারাও মাফ করে ফেলুন বলতে খুব ইচ্ছে করছে, কিন্তু পারবেন কি?’ তবে আর যাই করি না কেন, মানুষের ক্ষতি কিন্তু করি না, বৃষ্টির দিনে চা-তেলেভাজার সাথে ডিসকাস করার মতো একটা টপিক তো পেলেন।’ সেইসঙ্গে তিনি সংযোজন করেছেন, ‘যাদবপুরে এনআরসির ফুল ফর্ম জিগ্যেস করার সাথে এটার কিন্তু কোনও সম্পর্ক নেই।’
বিজেপি নেতাদের এ ধরণের আলটপকা মন্তব্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়াল, এ রাজ্যে দিলীপ ঘোষ অনেকেই এমন সব মন্তব্য করেছেন, যা বিপুল চর্চার বিষয় হয়েছে। সেই তালিকায় এবার নাম উঠল বাবুল সুপ্রিয়রও। তবে বাবুল যে একেবারেই অনুতপ্ত নন, তা তাঁর ফেসবুক পোস্টে নেটিজেনদের করা শ্লেষাত্মমূলক কটাক্ষ দেখেই স্পষ্ট। এমনকী নিজের পোস্টের শুরুতেই ‘হা হা’ লিখে স্পষ্টত বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই ভুল নিয়ে বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নন তিনি।