বাংলার নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃতের জন্মদিন উপলক্ষে তাঁকে স্মরণ করে রাজ্য জুড়ে চলছে ‘বিদ্যাসাগর সপ্তাহ’। উত্তর কলকাতার বাদুড়বাগানের যে বাড়িতে জীবনের শেষ পর্ব কেটেছিল বিদ্যাসাগরের, এবার সেই বাড়িতেই তার কীর্তির জন্য, তাঁকে শ্রদ্ধা, সম্মান জ্ঞাপন করার জন্য, সর্বোপরি, পরবর্তী প্রজন্মকে বিদ্যাসাগরের কীর্তিকে জানানোর জন্য, তাকে চেনানোর জন্য একটি জাদুঘর করার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার এই কথা জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে জন্ম থেকে শুরু করে তাঁর গোটা জীবনই কালক্রমে তৈরি করে সাজানো থাকবে এই জাদুঘরে। বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগরের জন্মদিনেই এই অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে দু’টি বইয়েরও উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী। বই দু’টির নাম হল ‘আমাদের বিদ্যাসাগর’ ও ‘ছোটদের বিদ্যাসাগর’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান বীরসিংহ গ্রামে তৈরি হবে শিক্ষামূলক ট্যুরিস্ট হাব।
বর্ণপরিচয়’-এর মতো বই লিখেছেন তিনি। বাঙালি শিশুকে ‘আ মরি বাংলা ভাষা’র সঙ্গে পরিচয় করিয়েছেন। ঊনবিংশ শতকে নারীর শোষনের বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগরের সোচ্চার ভূমিকা চিরস্মরণীয়। বিধবা বিবাহের প্রচলন করে সেযুগে বহু মানুষের বিরাগভাজন হতে হয়েছিল তাঁকে। তবু পিছপা না হয়ে নিজের কাজে ব্রতী থেকেছেন তিনি।
জাদুঘর নির্মিত হলে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ব্যবহৃত কিছু জিনিসও রাখা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এর ফলে বর্তমান প্রজন্মের পক্ষে সেই কিংবদন্তি মানুষটিকে বোঝা সম্ভব হবে, যিনি নারীর অবদমন রোধ ও বিধবা বিবাহের প্রচলনের মাধ্যমে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিদ্যাসাগর কলেজে উদ্বোধন হল বিদ্যাসাগরের একটি ব্রোঞ্জ মূর্তি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা বিদ্যাসাগরের সামাজিক সংস্কারের বিরুদ্ধে, তারাই তাঁর নামাঙ্কিত কলেজে তাঁর মূর্তি ভাঙার গুন্ডামি করে।”